• ‘ছায়ার সঙ্গে লড়াই করছি’, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কর্মীদের সতর্ক করলেন তৃণমূলের প্রবীণ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ...
    আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘আমরা এখন ছায়ার সঙ্গে লড়াই করছি, তাই লড়াইটা অনেক কঠিন’। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের কর্মীদের সতর্ক করলেন তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি ও প্রবীণ বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।

    বৃহস্পতিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের শহর কমিটির বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এই বার্তা দেন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শর্মিলা সরকার, পুরপ্রধান পরেশ সরকার, বিধায়ক খোকন দাস, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার, মহিলা নেত্রী নীলা মুন্সি-সহ একাধিক শীর্ষ নেতা।

    রবীন্দ্রনাথ এদিন বলেন, ‘সামনে বিধানসভার ভোট। আমরা ২০১৯ সালের বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভায় হেরেছিলাম। ২০২৪ সালে আবার জিতেছি। আগে সিপিএমের সঙ্গে লড়াই ছিল, তখন শত্রুকে চোখে দেখা যেত। এখন ছায়ার সঙ্গে লড়তে হয়, তাই লড়াইটা অনেক কঠিন।’ 

    উল্লেখ্য, রাজনীতির উত্তাপ ছড়িয়েছে দলীয় এই বিজয়া সম্মিলনীতেও। কারণ, সভার আগেই দলের নিয়ম না মেনে এক ব্লক সভাপতির পক্ষ থেকে পাঁচজন কর্মীকে বহিষ্কার করার ঘটনায় জেলা নেতৃত্বের তরফে উল্টে সেই ব্লক সভাপতিকেই শোকজ করা হয়।

    ঘটনাটি ঘটে বর্ধমান ২ নম্বর ব্লকে। গত ৩ অক্টোবর তৃণমূলের ওই ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনার সাংবাদিক সম্মেলন করে বৈকুন্ঠপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব ব্যানার্জি-সহ পাঁচজন প্রথম সারির কর্মীকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিলেন। 

    অভিযোগ ওঠে, এরা দল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে লাগাতার পোস্ট করছেন এবং দলের কাজ করছেন না। সেই সঙ্গে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন তিনি। রবিবার জেলা বিজয়া সম্মিলনীতে সেই প্রসঙ্গেই রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দলের কাজে অনেক সময় মতভেদ হয়’। 

    তিনি আরও বলেন, ‘বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্লককে জেলাকে জানাতে হয়, জেলা রাজ্যকে জানায়, তারপর রাজ্যের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোনও ব্লক সভাপতি একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তাই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ওই ব্লক সভাপতিকে শোকজ করা হয়েছে। তাঁর জবাব পাওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’

    তবে শোকজ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি পরমেশ্বর কোনার। তিনি শুধু বলেন, ‘আমি শোকজের জবাব দিয়েছি, দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মেনে নেব।’ এদিকে, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক বিজয়া সভায় ভিন্ন একটি ইস্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

    তিনি বলেন, ‘কিছু ক্লাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দেওয়া ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকার পুজো অনুদান নিয়েছে, অথচ তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ব্যানার লাগায়নি। আগামী বছর তাদের অনুদান থেকে বাদ দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিকূলতার মধ্যেও ছোট পুজো কমিটিগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন, এই সহানুভূতি আমরা যেন ব্যর্থ না করি।’

    পাশাপাশি, জেলার বিভিন্ন ব্লকেও শুরু হয়ে গিয়েছে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান। সামনে বিধানসভা ভোট, হাতে সময় মাত্র দশ দিন — তাই জেলা জুড়ে এখন তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞে ব্যস্ততা তুঙ্গে।
  • Link to this news (আজকাল)