• আজ থেকে খুলে যাচ্ছে জলদাপাড়া, পাহাড়ে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: আজ, শুক্রবার থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে যাচ্ছে জলদাপাড়া। শুরু হচ্ছে কার সাফারি। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কোদালবস্তি, শালকুমার ও চিলাপাতা রুটে কার সাফারি করতে পারবেন পর্যটকরা। গোরুমারাতেও কার সাফারি চালু রয়েছে। তবে, জলদাপাড়া কিংবা গোরুমারায় এখনই হাতি সাফারি চালু হচ্ছে না। জঙ্গলের ভিতরে কিছু সেতু ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলি মেরামত করে শীঘ্রই হাতি সাফারি চালু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) ভাস্কর জেভি।

    বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলে বক্সা ও জয়ন্তীতে আগেই কার সাফারি চালু হয়েছে। এবার জলদাপাড়াতেও সাফারি চালু হয়ে যাওয়ায় খুশি পর্যটকরা। একইসঙ্গে দুশ্চিন্তামুক্ত ট্যুর অপারেটররা।

    একশৃঙ্গ গন্ডারের আবাসস্থল জলদাপাড়ায় হাতি ও কার সাফারির অন্যতম রোমাঞ্চকর রুট মাদারিহাট ও তিতি। মাদারিহাটই জলদাপাড়ার মূল প্রবেশদ্বার। দুর্যোগের পর মাদারিহাট গেট দিয়ে জলদাপাড়ার মূল অংশে এখনও ডলোমাইট মিশ্রিত পলি জমে রয়েছে। ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে এখনই কার সাফারি চালু হচ্ছে না। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, শুক্রবার থেকে কোদালবস্তি, শালকুমার ও চিলাপাতায় ফের কার সাফারি চালু করা হচ্ছে। ওই তিনটি রুটে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে সাফারি করতে পারবেন।  

    ডুয়ার্সের পাশাপাশি অনেকটাই স্বাভাবিক ছন্দে পাহাড়ের পর্যটন। ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড় বাড়ছে পাহাড়েও। দার্জিলিং, কালিম্পং সর্বত্রই চোখে পড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা। সিলারিগাঁও, কাফেরগাঁও, দাওয়াইপানি, সিটং, চিমনি, লাভা, রিসপ, চুইখিম, ঝান্ডি সব জায়গাতেই এই মুহূর্তে পর্যটক রয়েছেন। চিরতুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্যে মুগ্ধ তাঁরা। উত্তর সিকিমে তুষারপাত অব্যাহত। বৃহস্পতিবার বরফে ঢেকে যায় লাচুং, জিরো পয়েন্ট। খুলে গিয়েছে সান্দাকফুর ট্রেকিং রুট। বিপর্যয়ের পর ওই রুট বন্ধ ছিল চারদিন। বুধবার তা খুলতেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। টাইগার হিল, দার্জিলিং চিড়িয়াখানা সহ খুলে দেওয়া হয়েছে সবই। চলছে টয়ট্রেন। পর্যটকদের জন্য খুশির খবর শুনিয়েছে আবহাওয়া দপ্তরও। সিকিমের আবহাওয়া আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন পাহাড়ে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে, আপাতত ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। প্রবল বৃষ্টিতে ধস নেমে পাহাড়ে যেসব রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, জোরকদমে সেগুলি মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। রোহিনীর রাস্তা সারাই চলছে। কাজ হচ্ছে বিজনবাড়ির পুলবাজারে ধস বিধ্বস্ত এলাকাতেও। পাহাড়ে পর্যটকদের নয়া ডেস্টিনেশন তাবাকোশি ধসে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। পুনর্গঠনের কাজ চলছে সেখানেও। দুধিয়ায় ভেঙে পড়া লোহার সেতুর পাশে হিউম পাইপ দিয়ে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী সেতু। তবে, এদিন সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি-সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে ২৯ মাইল ও গেলখোলার মাঝে অনেকটা জায়গা জুড়ে বসে গিয়েছে রাস্তা। এর জেরে রাস্তা খোলা থাকলেও প্রবল যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট এড়াতে আপাতত ওই রাস্তায় সপ্তাহে শুধুমাত্র তিনদিন সোম, বুধ ও শুক্রবার বাণিজ্যিক গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, দার্জিলিং, কালিম্পং সহ পাহাড়ের বিভিন্ন অফবিট ডেস্টিনেশনে পর্যটকরা রয়েছেন। কয়েকটি জায়গা বাদ দিয়ে আমরা পাহাড়ের সর্বত্রই পর্যটকদের পাঠাচ্ছি। বিপর্যয়ের জেরে এখনও পর্যন্ত ১০ শতাংশের মতো বুকিং বাতিল হয়েছে। দার্জিলিংয়ের হোটেল ব্যবসায়ী জীবন নন্দী বলেন, আমার হোটেলে কলকাতার পর্যটকরা রয়েছেন। তাঁরা ভালোভাবেই ঘুরছেন। ভালোই বুকিং রয়েছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)