একদিনের দুর্গাপুজোর পর উঃ দিনাজপুরের চোপড়ায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী জহরা মেলা
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, চোপড়া: একদিনের দেবী দুর্গার আরাধনা শেষে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় শুরু হয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন জহরা মেলা। মাঝিয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দকিশোরগছে বসেছে তিনদিনের এই মেলা। বুধবার হয়েছিল অষ্টমী দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজোর আটদিন পর এখানে পুজো হয়। একদিনের পুজো শেষে হয় তিনদিনের মেলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মেলার প্রথম দিনেই মানুষের ঢল নামে।
জহরা মেলার মূল আকর্ষণ এখানকার পুজো। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় অষ্টমী দুর্গাপুজো হয়েছে। পুজোকে কেন্দ্র করেই মেলা। ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে এই মেলায় আসেন। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্তের মানুষও আসেন এই মেলায়। পুজো ও মেলায় আনন্দে মেতে ওঠে এলাকা। শতাব্দী প্রাচীন এই মেলার জন্য অধীর আগ্রহে থাকেন জেলাবাসী। প্রথমদিনই মেলা জমে উঠেছে। মেলা কমিটির সম্পাদক অজয় পাল বলেন, এই পুজো ও মেলা এবার ১৩৭ তম বর্ষে। এখানে একদিন পুজো হলেও মেলা চলবে তিনদিন। বৃহস্পতিবার থেকে মেলা শুরু হয়েছে। চলবে শনিবার পর্যন্ত। পুজো কমিটির সহ সভাপতি গণেশ পাল বলেন, আগে মণ্ডপ বানিয়ে পুজো হতো। এখন স্থায়ী মন্দিরে পুজো হয়। প্রতিমার নিরঞ্জন হয় না। সারাবছর প্রতিমা মন্দিরে থাকে। পরের বছর পুজোর আগে নতুন প্রতিমা আনা হয়। এখানে এক চালার প্রতিমায় সিংহবাহিনী দুর্গার পাশে শুধু কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীই থাকে না। সঙ্গে আরও ২৮ জন দেবদেবীর আরাধনা হয়।স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলেন, আগে এলাকায় জহরা পাল নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তার উদ্যোগেই এই অষ্টমী দুর্গাপুজো শুরু হয়। পরে তাঁর নামানুসারেই এই মেলার নাম হয় জহরা মেলা।
পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে প্রত্যেক বছর এই মেলার ডাক হয়। এবার পঞ্চাশ হাজার টাকা ডাক হয়েছে। মেলায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। পুজো ও মেলায় মানুষের জন্য জল, আলো ও শৌচালয়ের ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন ও মেলা কমিটি। গতবছর চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতি মেলায় আলোর ব্যবস্থা করেছিল। এবারও তিনটি নতুন টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের অনেকে মেলা প্রাঙ্গনে শৌচালয় ও পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন। মেলায় বসেছে হরেকরকম খেলনার দোকান, নাগরদোলা ইত্যাদি। পুজো কমিটির সদস্য হরেন মালাকার বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ মেলায় আসেন। ভিড় সামাল দিতে চোপড়া থানার পক্ষ থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পও বসানো হয়েছে। এই মেলা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন তৈরি করে।