বৃষ্টি কমে গেলেই তিন নদীতে ড্রেজিং করবে জেলা প্রশাসন
বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: এবছর রেকর্ড পরিমাণে বৃষ্টি। আর তাতেই একাধিকবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফলে ভোগান্তি বেড়েছে মানুষের। সেকথা মাথায় রেখে বৃষ্টি কমলেই কংসাবতী, শীলাবতী ও সুবর্ণরেখা নদীতে নো-কস্ট ড্রেজিং করবে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত এই পদ্ধতিকে বাস্তবায়িত করার জন্য নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বীরভূম ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন নো-কষ্ট ড্রেজিং করার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কাজ চলছে ড্রেজিংয়ের। ১৬টি প্রকল্পর কাজ শেষ হলে উপকৃত হবেন কয়েকশো গ্রামের মানুষ। কংসাবতী ও সুবর্ণরেখা নদীতে নো-কষ্ট ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে। এরপর ধাপে ধাপে পারাং, কুবাই সহ ছোট নদীগুলির ড্রেজিং করবে প্রশাসন।
তবে প্রশ্ন, ড্রেজিংয়ের প্রক্রিয়া খুবই ব্যয়বহুল। রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভূঁইয়া বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে নো - কষ্ট ড্রেজিং হবে। এর ফলে নদীর গভীরতা বাড়বে। বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা এতে কমবে। মুখ্যমন্ত্রী চান একজন মানুষও যাতে সমস্যায় না পড়েন। বৃষ্টি কমলেই ড্রেজিং করার কাজ শুরু হবে।
তবে নো-কস্ট ড্রেজিং কীভাবে সম্ভব? প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, এতদিন নদীর পলি তোলা বা ড্রেজিং করার জন্য টেন্ডার করা হতো। নদী ড্রেজিং করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা মোটা অঙ্কের টাকা নিত। কিন্তু এখন থেকে ড্রেজিং করার জন্য কোনও সংস্থাকে টাকা দেবে না প্রশাসন। সেই সংস্থা বালি, বালি মাটি তুলে নিজেদের ইচ্ছেমতো তা বিক্রি করে লাভ করতে পারবে। মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, কংসাবতী নদীতে ড্রেজিং হলে মেদিনীপুর শহরের নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেচ দফতর তৎপরতার সাথে কাজ করেছে। প্রসঙ্গত, জেলায় গত ১৮ জুন নাগাদ বৃষ্টি শুরু হয়। কিন্তু সেই বৃষ্টি আর থামেনি। ১৯৭৮ সালের পর মানুষ এমন পরিস্থিতি ফের কবে দেখেছেন , তা অনেকেই মনে করতে পারছেন না। জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে গড়বেতা -১ ও গড়বেতা -২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে যায়। তবে সেই এলাকা থেকে জল নামলেও ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এবছর প্রায় পাঁচ দফায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির জেরে শুধু ঘাটাল মহকুমায় একশো কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুজোর আগে জল কমে যাওয়ায় হাসি ফুটেছিল ঘাটালের বাসিন্দাদের। তবে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। তাই বৃষ্টি কমলেই ড্রেজিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রসাশন।
কেশপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় পাঁজা বলেন, এবছর শুরু থেকেই সেচ দফতর তৎপর ছিল। বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ হয়েছে। তাই বৃষ্টি হলেও কেশপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। ড্রেজিং শুরু হলে খুবই উপকার হবে। বাম আমলে কোনও কাজ হতো না। কাঁসাই নদীর সংস্কার নিয়ে মেদিনীপুর ও খড়্গপুরের পুরপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।-নিজস্ব চিত্র