• বালির গাড়ি আটকানো নিয়ে ঝামেলা, দলেরই যুবনেতাকে মার পদ্ম বিধায়কের
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বালির গাড়ি আটকানোকে কেন্দ্র করে থানার ভিতরে  দলেরই যুব মোর্চার রাজ্য নেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার বিজেপি বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। বিধায়কের সঙ্গে থাকা অনুগামীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় জখম যুব মোর্চার নেতা সুরজ শর্মা বর্তমানে পুরুলিয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দলেরই যুব মোর্চার নেতাকে বিধায়কের মারধরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদি ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। 

    স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে পুরুলিয়া শহরে দু’টি বালিবোঝাই ট্রাক্টর আটকান পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা সুরজবাবু। তিনি বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য এবং সংগঠনের আসানসোলের ইনচার্জ। তাঁকেই ওইদিন রাতে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিধায়ক ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। সুরজবাবু বলেন, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলাম। নীলকুঠিডাঙা এলাকায় ত্রিপল ঢাকা দিয়ে একটি ট্রাক্টর যেতে দেখে সন্দেহ হয়। ট্রাক্টরটি থামিয়ে দেখি বালিবোঝাই রয়েছে। কয়েক মিনিট পর আরও একটি ট্রাক্টর চলে আসে। বৈধ কাগজ তাদের আছে কি না জানতে চাইলে তারা কিছু জানাতে চায়নি। বিষয়টি ফোন করে সদর থানার আইসিকে জানাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে ওই গাড়ি দু’টি আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ আমাকে লিখিত অভিযোগ করতে বলে। বাড়িতে খাওয়া দাওয়া করে রাতেই লিখিত অভিযোগ করতে থানায় পৌঁছে দেখি, কয়েকজন বালি মাফিয়ার সঙ্গে পুরুলিয়ার বিধায়ক দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বিধায়ক আমাকে দেখেই বলেন, ‘তোকে মেরে ফেলব। গুলি মেরে দেব। বেশি রংদার হয়েছিস। বালি গাড়ি আটকেছিস তুই।’ তারপর বিধায়ক সহ কয়েকজন মিলে মারতে এগিয়ে এলে প্রাণ বাঁচাতে থানার ভিতরে ঢুকে পড়ি। তবে সেখানেও রক্ষা পেলাম না। থানার ভিতরে ওরা আমাকে মারে। মাটিতে ফেলে লাথি মারে। বিধায়ক নিজেও মারে। ওরা ভিডিও করছি দেখে মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে আসি। রাতেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় আসার পর পুলিশ মোবাইল ফেরত দেয়। পরে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হই। অবৈধ বালিগাড়ি আটকানোয় বিধায়ক থানায় এসে কেন মারধর করলেন, তা তিনি বলতে পারবেন। দলকে জানিয়েছি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেব। 

    পুরুলিয়ার বিধায়ক বলেন, সুরজ আমার নাম করে বালির গাড়ির কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা চেয়েছিল। বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই থানার আইসিকে জানিয়েছিলাম। আমাকে বদনাম করে কেউ টাকা কামাতে চাইলে ছাড়ব কেন? বালি গাড়ির বৈধ কাগজ আছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের। রাস্তায় ওকে গাড়ি আটকাতে কে অনুমতি দিল? মারধরের অভিযোগও ঠিক নয়। থানায় ও নিজেই আমার দিকে তেড়ে এসেছিল। ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। বাইরে কে কী করেছে জানি না। ভিডিওতে কী কোথাও আমাকে মারধর করতে দেখা গিয়েছে? 

    বিধায়কের নাম করে টাকা চাওয়ার অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন সুরজবাবু। থানার ভিতরে মারধরের ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে সদর থানার আইসিকে ফোন করা হলে তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সুরজ অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিজেপির পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শঙ্কর মাহাত বলেন, বাইরে রয়েছি। বিষয়টি বিস্তারিত জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।
  • Link to this news (বর্তমান)