• মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চূড়ান্ত প্রস্তুতি প্রশাসনের, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ শুরু খুব শীঘ্রই
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নদীগুলির জলস্তর কমতেই ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ কার্যকরী করতে মাঠে নেমে পড়ল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকে প্রশাসনিক পর্যায়ের পরিদর্শন শুরু হল। এদিন ঘাটাল শহরের বিভিন্ন জলবদ্ধ এলাকা ও নদী বাঁধ পরিদর্শন করেন ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস, সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উত্তম হাজরা, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল মাখাল সহ জনপ্রতিনিধিরা। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নভেম্বর মাস থেকেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অধীনে প্রস্তাবিত প্রকল্পের মূল কাজ শুরু করার লক্ষ্যে প্রস্তুতি চলছে।

    ঘাটাল শহরের মধ্যে দিয়ে শিলাবতী নদী প্রবাহিত হয়েছে। প্রত্যেক বছর শিলাবতীর জলস্ফীতি হলেই ঘাটাল শহরের ১ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অঙ্গ হিসেবে ঘাটাল শহরটিকে রিটেনিং ওয়াল দিয়ে ঘেরার কথা ছিল। রিটেনিং ওয়াল তৈরি করতে গেলে ২৫০ বছরেরও বেশি পুরানো ওই শহরের বহু ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান এবং বসতবাড়ি ভাঙতে হতো। যে কারণে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের খসড়া প্রকাশের পর শহরবাসী আন্দোলনও শুরু করেছিল। তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপকুমার মাজি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন  মানুষের ক্ষতি না করে মাস্টার প্ল্যানের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। সেই মতোই সংশোধিত প্ল্যান তৈরি হয়েছে। সংশোধিত প্ল্যান অনুযায়ী সে অর্থে কারও বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান নষ্ট হবে না। সেই বিষয়টিই এদিন পরির্দশন করা হচ্ছিল।

    ঘাটাল পঞ্চায়েত সমতির সহকারী সভাপতি বিকাশ কর বলেন, এদিনের পরিদর্শনে আধিকারিকরা মূলত ঘাটাল শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শিলাবতী নদীর পাড় সংলগ্ন এলাকা পুরাতন ঘাটাল বাজার সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জলনিকাশির অবস্থা এবং বাঁধের বর্তমান গঠন খতিয়ে দেখেন। কোন জায়গা দিয়ে বাঁধ তৈরি হবে সেটিও দেখা হয়। সেচদপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর আগে এলাকাভিত্তিক বাস্তব পরিস্থিতি যাচাই করা জরুরি। সেজন্যই প্রশাসন ও সেচদপ্তরের আধিকারিকরা পর্যবেক্ষণ করছেন।  

    উল্লেখ্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করার দাবি দীর্ঘদিনের। প্রতিবছর বর্ষায় ঘাটাল শহর ও আশপাশের বিশাল অংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া শিলাবতী, কংসাবতী, ঝুমি নদীগুলি বর্ষায় উপচে গিয়ে জল ঢোকে বাজার, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, সরকারি অফিস, এমনকী বসতবাড়িতেও। দীর্ঘ ১৪ বছর কেন্দ্রীয় সরকার মাস্টার প্ল্যানের জন্য একটি টাকাও না দেওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোষাগার থেকেই মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করার জন্য মাঠে নেমে পড়েছে। 

    প্রশাসনিক সূত্রে খবর, পরবর্তী ধাপে দাসপুরের দু’টি ব্লকের বিভিন্ন এলাকা পর্যবেক্ষণ করা হবে। নদীপাড় শক্ত করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও খাল সংস্কারের কাজকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্পের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করছে সেচদপ্তর। সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার উত্তম হাজরা বলেন, নদী ও খালের ওপর ভিত্তি করে বাঁধের অবস্থান চিহ্নিত করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় পুরনো বাঁধ বসে গিয়েছে, সেগুলি নতুন করে তৈরি করতে হবে। ঘাটালের শহরাঞ্চলে এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে বাঁধ নেই, জল ঢুকে পড়ে। সেগুলিও মাস্টার প্ল্যানের আওতায় আসবে।
  • Link to this news (বর্তমান)