নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা, সিউড়ি: গত বুধবারই বীরভূমের ১৯টি ব্লকের মধ্যে ১৮টিতে বিজয়া সম্মিলনির তারিখ ঘোষণা করেছে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি। তালিকায় নেই সিউড়ি-২ ব্লক। এনিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এনিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামও। বোলপুর থেকে এই ব্লকে বিশৃঙ্খলা পাকানো হচ্ছে বলেও বৃহস্পতিবার অভিযোগ শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। বিতর্কে ইতি টানতে অবশ্য রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেছে। ওই ব্লকে নুরুলকেই বিজয়া সম্মিলনির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোর কমিটির সদস্যদের কাছে বার্তাও এসে পৌঁছেছে। যদিও নুরুলের দাবি, তিনি সোশ্যাল মিডিয়া মারফত এব্যাপারে জেনেছেন। কোর কমিটির কেউ তাঁকে কিছু জানাননি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বোলপুরে কোর কমিটির বৈঠক হয়েছে। বুধবার জেলা তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনিতে জেলার সমস্ত ব্লকে কবে এই কর্মসূচি হবে তা ঘোষণা করেন বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। শুধু বাদ রাখা হয় সিউড়ি-২ ব্লককে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতেই ওই তালিকায় নাম ছিল না সিউড়ি-২ ব্লকের। তৃণমূলের অন্দরের খবর, পুজোর আগে কোর কমিটিকে নিয়ে কলকাতায় বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সি। বৈঠক চলাকালীন সিউড়ি-২ ব্লক নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের মধ্যে মতান্তর হয়। এরপরই রাজ্য নেতৃত্বের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, জেলার বাকি সব ব্লকের ব্যাপারে কোর কমিটি হস্তক্ষেপ করলেও সিউড়ি-২ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। রাজ্য নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবে।
তৃণমূলের বীরভূম জেলা কোর কমিটির এক সদস্য বলেন, রাজ্যের নির্দেশ মেনেই বিজয়া সম্মিলনির তালিকায় ওই ব্লকের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে রাজ্যের তরফে ব্লক সভাপতিকে বিজয়া সম্মিলনির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এটা জানা সত্ত্বেও কেন প্রকাশ্যে ব্লক সভাপতি বিতর্ক তৈরি করছেন জানা নেই। নুরুল এদিন বলেন, কেন এই ব্লকের নাম নেই সেটা যাঁরা তালিকা বানিয়েছেন তাঁরাই বলতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মেসেজ আমি দেখেছি। কিন্তু আমাকে কেউ সেব্যাপারে কিছু বলেননি। বোলপুর থেকে সিউড়ি-২ ব্লকে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে।
এই ব্লকে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব আগেও বারবার সামনে এসেছে। মূলত জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের অনুগামী হিসেবে পরিচিত সিউড়ি-২ ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের সঙ্গে অনুব্রত অনুগামী অশ্বিনী মণ্ডলের মধ্যে গণ্ডগোল প্রকাশ্যে এসেছে। বারবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে। দলের ঘোষিত কর্মসূচিতে একই ব্লকে দু’টি পৃথক মিছিলও হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, কেন সিউড়ি-২ ব্লকের বিজয়া সম্মিলনির তারিখ ঘোষণা হয়নি, সেটা এই মুহূর্তে বলতে পারব না। তবে খুব শীঘ্রই বিজয়া সম্মিলনির তারিখ জানা যাবে।
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, সিউড়ি-২ ব্লকে তৃণমূলের মধ্যে চরম গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। আগেও কেষ্ট-কাজল অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষ আমরা দেখেছি। ওখানে বিজয়া সম্মিলনি করলেই অশান্তি হবে। তাই ওই ব্লকের উল্লেখ নেই।