• শুয়োরের হাত থেকে শস্য বাঁচাতে বিদ্যুৎবাহী তার, জগৎবল্লভপুরে ফসলের মাঠে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রৌঢ়ের মৃত্যু
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: সারারাত নিখোঁজ থাকার পর সাতসকালে চাষের জমি থেকে উদ্ধার হল প্রৌঢ়ের দেহ। ফসলের মাঠে শুয়োরের উৎপাত থেকে বাঁচতে বেআইনিভাবে লাগানো হয়েছিল বিদ্যুৎবাহী তার। তাতেই তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ের। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে জগৎবল্লভপুরের পাতিহালে। মৃতের নাম নবকুমার দাস (৬০)। তিনি একজন চাষি। বাড়ি পাতিহালের ঢ্যাংপাড়ায়। এই ঘটনায় জগৎবল্লভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঢ্যাংপাড়ার বাসিন্দা নবকুমার দাস বুধবার বিকেলে জমির ফসল দেখতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। এরপর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের লোকজন শেষরাতে জমিতে গিয়ে তাঁকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ফিরে আসেন। এদিন সকালে চাষের মাঠের এক কোণে নবকুমারবাবুকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ফসলের মাঠে লাগানো বিদ্যুৎবাহী তারে তড়িদাহত হয়ে নবকুমারের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে পরিবার। যদিও সেই জমিতে বিদ্যুৎবাহী তার পায়নি পুলিশ। আগেই কেউ বা কারা তা সরিয়ে নিয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। মৃতের পরিবারের সদস্য বাপ্পা দাস বলেন, ‘জমিতে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখা হয়েছিল। হাই-ভোল্টেজের কারেন্ট ছিল তাতে। হেঁটে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎপৃষ্ট হন কাকা। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক।’ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ। 

    স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, ‘বুনো শুয়োরের উৎপাত থেকে ফসল বাঁচাতে জমিতে বিদ্যুৎবাহী তার লাগানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। এই কাজ বেআইনি হলেও অনেকেই করছে।’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকেই জমির চার ধারে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখে। এতে বন্য শুয়োর মাঠে ঢুকে ফসলের ক্ষতি করতে পারে না। 

    হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই ওই চাষির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও একজনের খোঁজ চলছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)