নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তিনবছরের বিবাহিত জীবন। স্বামী-সন্তানের সঙ্গে থাকাকালীনই পরকীয়া সম্পর্কে জড়ান গৃহবধূ। শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বিয়েতে রাজি হননি প্রেমিক। অভিমানে বাপের বাড়ি ফিরে বুধবার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন বধূ। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম প্রিয়া অঙ্কুশি (২৪)। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি থানা এলাকায় বধূর শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু, প্রেমিকের প্রত্যাখানের পর থাকছিলেন হরিদেবপুর থানা এলাকার জোকার নবপল্লিতে বাপের বাড়িতে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে বধূর।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর চারেক আগে প্রেম করেই বিয়ে হয়েছিল প্রিয়ার। স্বামীর নাম লক্ষ্মীকান্ত অঙ্কুশি। বছরখানেক আগে তাঁদের এক সন্তানের জন্ম হয়। সূত্রের খবর, সেই সময় বাপের বাড়িতে কয়েকমাস ছিলেন প্রিয়া। তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব তৈরি হয়। দু’জনই আলাদা দেখা করতেন। বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কের রূপ নেয়। যুগলের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। সেই অশান্তি থেকে মুক্তির আশায় প্রেমিককে বিয়ে করে নতুন সংসার শুরুর সিদ্ধান্ত নেন প্রিয়া। সেখানেই বিপত্তি। প্রাথমিকভাবে প্রেমিককে বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানাননি বধূ। শ্বশুরবাড়ি, স্বামী-সন্তান ছেড়ে সরাসরি প্রেমিকের বাড়ি গিয়ে ওঠেন তিনি। বিয়ের প্রস্তাব দিতেই তা প্রত্যাখান করেন প্রিয়ার প্রেমিক। মঙ্গলবার জোকায় বাপের বাড়িতে ফিরে আসে মেয়ে। সেখানেই ভাই ও মা’কে গোটা বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।
বুধবার দুপুর খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘরের ভিতরে ছিলেন প্রিয়া। তাঁর ভাই পুলিশকে জানিয়েছেন, ‘সন্ধ্যা থেকেই বারবার বমি করতে শুরু করে দিদি। অচৈতন্য হয়ে পড়ে। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেলে মৃত্যু হয় প্রিয়ার।’ হাসপাতালের তরফে বেনিয়াপুকুর থানায় বিষয়টি জানানো হয়। বিষ খাওয়ার ঘটনাস্থল জোকা হওয়ায় পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হরিদেবপুর থানা। ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে দেখেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘর থেকে মিলেছে বিষ। সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরিবারের তরফে থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগপত্র জমা পড়েনি। লালবাজার জানিয়েছে, ঘটনার নেপথ্যে প্রিয়ার প্রেমিকের কোনও ভূমিকা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।