ছাদে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ, তবে ডেসিবেল বাড়ল, কালীপুজোয় রাজ্যে একাধিক নির্দেশিকা
আজ তক | ১০ অক্টোবর ২০২৫
সামনেই দীপাবলি। অভিযোগ, প্রতিবছরই নির্দেশিকা ও নজরদারিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার শব্দবাজি ফাটে কলকাতায়। কানে তালা লাগে লোকজনের। তাই এবছর দীপাবলিকে কেন্দ্র করে পরিবেশ দূষণ রুখতে তৎপর হয়েছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এবছর ২০ অক্টোবর দীপাবলি। তার আগেই বড় আবাসন কমপ্লেক্সগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ। মূলত ছাদ থেকে পটকাবাজি ফাটানো রুখতেই এই পদক্ষেপ।
পিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে একাধিক সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হলেও, বড় বিল্ডিংয়ের ছাদ বা বারান্দা থেকে পটকাবাজি ফাটানোর প্রবণতা এখনও বহাল। তাই এবার আরও সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চলেছে পর্ষদ।
কেবল গ্রিন বাজিই অনুমোদিত
পিসিবি মনে করিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে শুধুমাত্র সার্টিফায়েড 'সবুজ বাজি' (Green Crackers) ব্যবহার করা অনুমোদিত। এই বাজিগুলি পরিবেশবান্ধব ও কম শব্দযুক্ত হয়, যা CSIR-NEERI কর্তৃক অনুমোদিত এবং শংসাপত্রসহ বিক্রি হয়।
বাজির বাক্সে থাকা QR কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে বাজির নাম, প্রস্তুতকারকের নাম, রাসায়নিক গঠন ও নির্গমন হ্রাসের শতাংশ। এছাড়াও শংসাপত্রে NEERI-এর লেটারহেড, সীল ও অনুমোদিত কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকা আবশ্যক।
সময়সীমা: রাত ৮টা থেকে ১০টা
পিসিবি মনে করিয়ে দিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দীপাবলির রাতে শুধুমাত্র রাত ৮টা থেকে ১০টা-এই দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই বাজি ফাটানো যাবে। নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শব্দের মাত্রার নতুন সীমা
রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, আতশবাজির শব্দের সীমা উৎস থেকে ৪ মিটার দূরে ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত অনুমোদিত। ২০২৩ সালের আগে এটি ৫ মিটার দূরে ৯০ ডেসিবেল ছিল। অর্থাৎ কিছুটা শিথিলতা থাকলেও তা কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই থাকবে।
পুলিশ ও প্রশাসনের সমন্বয়
বৈঠকে পিসিবির পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিও থাকতে পারে। কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা এই প্রচারে শিশু ও ছাত্রছাত্রীদের দিকেও নজর দেবে। অতীতে দেখা গেছে, অনেক শিশু অভিভাবকদের অবৈধ বাজি কিনে দিতে জোর করে এবং তারাই কখনও কখনও ছাদ থেকে বাজি ছোঁড়ে। পুলিশ জানায়, শিশুদের মধ্যেও সচেতনতা তৈরি করা এখন জরুরি।
বাজি বাজারে কড়া নজরদারি
পিসিবি জানিয়েছে, কলকাতা জুড়ে নির্দিষ্ট বাজি বাজারে কেবলমাত্র সবুজ বাজিই বিক্রি করা হবে। এই বাজারগুলি কলকাতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে এবং সঙ্গে থাকবেন ফায়ার ব্রিগেড, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। বাজি বাজারের তারিখ ও স্থান শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে। সব আবাসনের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব নয়, তবু চলবে প্রচার
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, কলকাতার সমস্ত পাড়া বা আবাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। তবে জনসচেতনতা অভিযান চলবে। ছাদ বা বারান্দা থেকে বাজি না ফেলার বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিং, সোশ্যাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন, সব মাধ্যমেই জোর দেওয়া হবে।