রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য সপ্তাহান্তে বন্ধ থাকছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, কোন রাস্তায় যাতায়াত করবেন? বড় আপডেট কলকাতা পুলিশের...
আজকাল | ১০ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আবারও বড়সড় মেরামতির কাজ শুরু হতে চলেছে বিদ্যাসাগর সেতুতে (দ্বিতীয় হুগলি সেতু)। হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্সের (HRBC) তত্ত্বাবধানে এই গুরুত্বপূর্ণ রিপেয়ার ও রিহ্যাবিলিটেশন প্রকল্পের কাজ চলবে, যেখানে সেতুর স্টে কেবল, হোল্ডিং ডাউন কেবল এবং বেয়ারিং-সহ একাধিক যান্ত্রিক অংশ প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, এই কাজের জন্য আগামী ১১ অক্টোবর (শনিবার) ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত এবং ১২ অক্টোবর (রবিবার) বিকেল ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিদ্যাসাগর সেতু সম্পূর্ণভাবে যান চলাচলের জন্য বন্ধ থাকবে।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা মোটর যানবাহন আইন এবং কলকাতা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণবিধি অনুসারে এক নির্দেশ জারি করে জানান, ‘সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখার জন্য এই কাজ অত্যাবশ্যক। জনসাধারণের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত, কিন্তু এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সেতু বন্ধের সময় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বিকল্প পথে পরিচালিত হবে। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের প্রকাশিত নতুন ডাইভারশন পরিকল্পনা অনুযায়ী, পশ্চিমমুখী যানবাহন যারা সাধারণত এ.জে.সি. বোস রোড হয়ে সেতুতে উঠতেন, তারা টার্ফভিউ মোড় থেকে হেস্টিংস ক্রসিং হয়ে সেন্ট জর্জ গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড ও হাওড়া ব্রিজের মাধ্যমে পশ্চিম দিকে যেতে পারবেন। বিকল্পভাবে, হেস্টিংস ক্রসিং থেকে কেপি রোডে ডানদিকে ঘুরেও যান চলাচল করা যাবে।
ফোর্ট উইলিয়াম দিক থেকে কেপি রোড হয়ে বিদ্যাসাগর সেতুর দিকে রাস্তা বন্ধ থাকবে। আমজনতাকে ১১ ফারলং গেট থেকে হেস্টিংস ক্রসিং হয়ে স্ট্র্যান্ড রোড ও হাওড়া ব্রিজের দিকে চালিত করা হবে। খিদিরপুর দিক থেকে যারা সাধারণত সিজিআর রোড হয়ে সেতুতে ওঠেন, তাদের হেস্টিংস ক্রসিং থেকে বাঁদিকে ঘুরে স্ট্র্যান্ড রোড ও হাওড়া ব্রিজ হয়ে যেতে বলা হয়েছে।
যাত্রীরা যারা সাধারণত ওয়াই-পয়েন্ট (ঘোড়া পাসের নিকটে) র্যাম্প ব্যবহার করে সেতুতে উঠতেন, তারা এবার থেকে ১১ ফারলং গেট ঘুরে কেপি রোড, রেড রোড ও হাওড়া ব্রিজের মাধ্যমে গন্তব্যে যেতে পারবেন। প্রয়োজনে শহরের অন্যান্য প্রধান সড়কও অস্থায়ীভাবে খুলে দেওয়া হবে, যাতে যান চলাচল যতটা সম্ভব মসৃণ রাখা যায়।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ নাগরিকদের অনুরোধ করেছে, এই দুই দিন অগ্রিম রুট পরিকল্পনা করে রওনা দিতে। অ্যাপ ক্যাব, বাস ও মালবাহী ট্রাক চালকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্ধারিত বিকল্প রুট মেনে চলতে। সেতু এবং আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে, যাতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোনও সমস্যা না হয়।
কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা বলেন, ‘সেতুর ওপর একটানা ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে বেশ কিছু স্ট্রাকচারাল অংশের মেরামত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই দুই দিনের কাজের মাধ্যমে সেতুর নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।’ কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেতুর মেরামত চলাকালীন সময় যানবাহন চলাচলে কিছুটা অসুবিধা হলেও এই উদ্যোগ শহরের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।