• যাত্রীর হাত থেকে ছোঁ মেরে ফোন তুলে নিলেন! পুলিশকর্মীর কাণ্ড থেকে চোখ ছানাবড়া নেটিজেনদের, তারপর যা হল...
    আজকাল | ১১ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: যাত্রীর হাত থেকে ফোন কেড়ে নিলেন পুলিশকর্মী! চোর নন, সচেতন করতেই এমন কাণ্ড আরপিএফ জওয়ানের। অনেকের কাছেই ট্রেনযাত্রা হল ফোনে বকেয়া কথাবার্তা সেরে নেওয়ার সেরা সময়। কিন্তু জানালার ধারে বসে ফোনে কথা বলা এখন রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কারণ, যে কোনও মুহূর্তে চোর-ছিনতাইবাজরা যাত্রীর হাত থেকে ফোন ছিনিয়ে নিতে পারে। এই বিষয়টি সম্পর্কেই সচেতনতা বাড়াতে এক আরপিএফ কর্মী ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তবে ভিডিওটিতে সচেতনতার কৌশল অভিনব। এক মহিলা যাত্রীর হাত থেকে নিজেই ফোনটি ছিনিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

    ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "মহিলা যাত্রীকে তাঁর অসতর্কতা সম্পর্কে শিক্ষা দিতেই ওই আধিকারিক এই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। সমস্ত বাহিনী সুরক্ষার জন্য রয়েছে, কিন্তু আমাদেরও সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে। তবেই যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো সম্ভব।"

    ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক মহিলা ট্রেনের স্লিপার ক্লাসের কামরায় জানালার ধারে হাত রেখে বসে আছেন এবং ফোনে কথা বলছেন। হঠাৎই এক পুলিশকর্মী তাঁর কাছে এসে মোবাইলটি ছিনিয়ে নেন, যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই চমকে ওঠেন ওই মহিলা।

    অবশ্য ফোনটি সঙ্গে সঙ্গেই ফিরিয়ে দেন ওই জওয়ান। তবে তার আগে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অসচেতন থেকে ফোনে কথা বলার বিপদ সম্পর্কে তাঁকে সতর্ক করেন। ভিডিওর শেষে ওই পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা যায়, “এই ভাবেই মোবাইল ছিনতাই হয়ে যায়।"

    ভিডিওটি দেখে নেটিজেনরা ওই পুলিশকর্মীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এক জন লিখেছেন, "স্যার, খুব সুন্দর উদাহরণ।" অন্য এক জনের মন্তব্য, "সাধারণ মানুষকে সচেতন করা খুব জরুরি। আমি আপনাকে নিয়ে গর্বিত।" তৃতীয় এক জন লিখেছেন, "কী দারুণ ভাবনা!"

    রাজু চৌধুরী নামে ওই আরপিএফ কর্মী প্রায়শই রেল স্টেশন এবং ট্রেনে যাত্রীদের সঙ্গে কথোপকথনের ভিডিও শেয়ার করেন। এখনও পর্যন্ত ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ছিল ৬ হাজারের বেশি এবং মোট ১৯টি পোস্ট ছিল।

    প্রসঙ্গত, স্লিপার কোচে ভ্রমণের সময় সতর্ক থাকার পাঠ দিতে এক রেল পুলিশ আধিকারিকের অভিনব পন্থা নেওয়ার ভিডিও সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা দেখে হতবাক নেটিজেনরা।

    ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ওই ভিডিওর শুরুতে দেখা যায়, এক রেল পুলিশ আধিকারিক একটি স্লিপার কোচে প্রবেশ করছেন। লোয়ার বার্থে এক ব্যক্তি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন এবং আপার বার্থে আর এক যাত্রী শুয়ে আছেন। কামরায় এক সাফাইকর্মীও নিজের কাজ করছেন। ওই পুলিশ আধিকারিক ধীর পায়ে ঘুমন্ত যাত্রীর কাছে এগিয়ে যান এবং নিঃশব্দে তাঁর বুকপকেট থেকে ফোনটি বের করে নেন। এরপরেই তাঁর কাঁধে টোকা দিয়ে তাঁকে ঘুম থেকে তোলেন।

    ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন ওই ব্যক্তি প্রথমে হকচকিয়ে যান। এরই মধ্যে আধিকারিক ফোনটি নিজের পিছনে লুকিয়ে ফেলেন। এরপর তিনি ওই যাত্রীকে বলেন, "আপনার ফোনটি খোয়া গিয়েছে, কেউ নিয়ে নিয়েছে। মনে করতে পারছেন কোথায় রেখেছিলেন?"

    এই কথা শোনা মাত্রই ওই ব্যক্তির ঘুম ছুটে যায়। তিনি তড়িঘড়ি নিজের ব্যাগপত্র ঘাঁটতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে পুলিশ দেখে আপার বার্থের যাত্রীও উঠে বসেন। এরপরেই ওই আধিকারিক তাঁকে সতর্ক করে বলেন, "যদি বুকপকেটে ফোন রাখেন, যে কেউ তুলে নিতে পারে আর আপনি টেরও পাবেন না। ফোন সব সময় ব্যাগে বা প্যান্টের পকেটে রাখবেন।"

    এই পরামর্শ দেওয়ার ফাঁকেই তিনি ফোনটি ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, "দয়া করে নিজের জিনিসের খেয়াল রাখুন। একা যাত্রা করার সময় এটা অত্যন্ত জরুরি।"

    কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এত বড় একটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরেও ওই যাত্রী ফোনটি হাতে নিয়ে ফের নিজের সেই বুকপকেটেই রেখে দেন! চুলচেরা বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েও তাঁর যে কোনও শিক্ষাই হয়নি, তা তাঁর আচরণেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

    গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেয়ার করা ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ২ কোটি ৪৪ লক্ষেরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছেন। পোস্টটির কমেন্ট বক্সে উপচে পড়েছে নেটিজেনদের ভিন্ন মন্তব্য। অনেকেই যাত্রীর কাণ্ডজ্ঞানহীনতার সমালোচনা করেছেন।

    এক জন ব্যবহারকারী মন্তব্য করে লিখেছেন, "কাকা তাঁর ভুল থেকে কিছুই শিখলেন না।" আর এক জনের মন্তব্য, "ভাইটি ভুল থেকে শিক্ষা না নেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" অন্য এক জন লেখেন, "আবার সেই ওখানেই রাখল।" তবে বহু মানুষ ওই পুলিশ আধিকারিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তাঁর কাজের প্রশংসা করে কেউ লিখেছেন, "অফিসার তাঁকে উচিত শিক্ষা দিয়েছেন," আবার কেউ লিখেছেন, "পুলিশকর্মীর জন্য শ্রদ্ধা রইল।" যদিও এই ঘটনাটি ঠিক কবে এবং কোন ট্রেনের, তা বিস্তারিত জানা যায়নি।

     
  • Link to this news (আজকাল)