• বিধানসভা ভোটের জেরে এগিয়ে আসছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ অক্টোবর ২০২৫
  • আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের জেরে এগিয়ে আনা হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা। ফলে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম সেমেস্টারের ছয় মাস পরেই দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও, ভোটের সময় মাথায় রেখে সেই পরীক্ষা মার্চের বদলে ফেব্রুয়ারিতেই নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

    শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা। বিধি অনুসারে দ্বিতীয় সেমেস্টার পরীক্ষা হওয়ার কথা ১৬ মার্চ থেকে। কিন্তু ভোটের আগে স্কুলগুলিতে বুথ তৈরির কাজ শুরু হবে বলে ফেব্রুয়ারিতেই পরীক্ষা শেষ করতে হবে। ফলে হাতে পাওয়া সময় প্রায় এক মাস কমে যাচ্ছে।

    এতে শিক্ষক মহলে সিলেবাস শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, অক্টোবরের প্রায় গোটা মাসই পুজো ও ছুটির কারণে স্কুল বন্ধ থাকবে। সরকারি ভাবে পঠনপাঠন শুরু হবে ২৫ অক্টোবর থেকে। অর্থাৎ, হাতে থাকবে মাত্র তিন মাসের মতো সময়। এই অবস্থায় দ্বাদশ শ্রেণির পূর্ণ সিলেবাস শেষ করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।

    নারায়ণদাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হলেও হাতে কার্যত ৯০ দিন সময় পাওয়া যাবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন সিলেবাস অনুযায়ী সব বিষয় শেষ করা অত্যন্ত কঠিন কাজ।

    একই মত পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজার। তাঁর কথায়, এত কম সময়ে থিওরি ও প্র্যাকটিক্যাল দু’টোই শেষ করা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষা সংসদের উচিত ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে সিলেবাস কিছুটা কমিয়ে দেওয়া বা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া।

    শিক্ষকদের আশঙ্কা, নভেম্বরে ক্লাস শুরু হলেও মাধ্যমিকের টেস্ট, সামিটিভ পরীক্ষা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, পুজো ও সরকারি ছুটির জন্য ক্লাস বারবার ব্যাহত হবে। আগামী ৩ থেকে ১৩ নভেম্বর মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা, ডিসেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির সামিটিভ পরীক্ষা, জানুয়ারিতে যুব দিবস, নেতাজি জয়ন্তী, সাধারণতন্ত্র দিবস, সরস্বতী পুজো— সব মিলিয়ে পড়ুয়াদের হাতে পঠনপাঠনের সময় থাকবে না বললেই চলে।

    তবু সিলেবাস কমানো বা পরীক্ষা পিছোনোর কোনো পরিকল্পনা নেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের। সংসদের সচিব প্রিয়দর্শনী মল্লিক জানান, সরকারের অনুমতি নিয়েই ২০২৬ সালের পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। সিলেবাস পরিবর্তনের সুযোগ নেই। পড়ুয়ারা যাতে কোনও অসুবিধায় না পড়ে, সেদিকে কাউন্সিল নজর রাখবে।

    তবে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মতে, পড়াশোনার গতি এমনিতেই কমেছে নতুন সেমেস্টার পদ্ধতির চাপে। তার মধ্যে যদি সময় সংকট তৈরি হয়, তা হলে পরীক্ষার্থীদের মানসিক চাপ আরও বাড়বে। এখন শিক্ষা সংসদ এই পরিস্থিতি কতটা বাস্তবসম্মতভাবে মোকাবিলা করতে পারে, সে দিকেই সবার নজর।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)