বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: বিহার ভোটে আর বাকি মেরেকেটে মাসখানেক। মনোনয়নের পাশাপাশি রাজনৈতিক তৎপরতা, আসন সমঝোতা ঘিরে বৈঠক, দলবদলের পালাও চলছে মগধভূমে। আসনরফা নিয়ে এনডিএ এবং ইন্ডিয়া দুই শিবিরেই অশান্তি। স্বস্তিতে প্রশান্ত কিশোরের নেই জন সূরজ পার্টিও। তবে তুলনায় এনডিএর ছবিটা কিছুটা সুখকর।
রাজ্যসভায় আসন ও বিহার বিধানসভা কাউন্সিলে সদস্য পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চিরাগ পাসওয়ানকে বাগে এনেছে বিজেপি। দফায় দফায় বৈঠকের পর বিজেপির প্রস্তাবিত ২২টি আসনে লড়তে রাজি হয়েছেন প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ানের পুত্র চিরাগ। দুই শিবির দীর্ঘ আলোচনার পর ঐক্যমতে পৌঁছেছে। দিন কয়েক আগে পর্যন্ত আলোচনা চলছিল চিরাগ আদৌ এনডিএতে থাকবেন কিনা, সেটা নিয়ে। এমনকী মাঝে এলজেপি প্রধান যেভাবে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছিলেন, তাতে এনডিএ শিবিরে টেনশনের চোরাস্রোতও বইছিল। চিরাগ বিহার বিজেপির কোনও নেতার সঙ্গে দেখাই করতে চাইছিলেন না। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে জট কাটে। সূত্রের খবর, চিরাগকে ২২টি আসনে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিজেপি। প্রাথমিকভাবে চিরাগ অন্তত ৪০টি আসনে লড়াই করার দাবিতে অনড় ছিলেন। পরে আপস আলোচনায় তিনি ২৬ আসন পর্যন্ত নামতে রাজি হয়েছেন। চার আসন নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে।
আবার বামেরা বেশি আসন দাবি করায় মহাজোটে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে। বাম নেতৃত্বের দাবি গতবার ২৯টি আসনে লড়াই করে ১৬টি আসনে জয়ী হয় তারা। অর্থাৎ স্ট্রাইক রেটে সকলের থেকে এগিয়ে। গতবারের ২৯-এর বদলে এবার ৪০টি আসন দাবি করেছে বামেরা। আসনরফা চূড়ান্ত করতে শুক্রবার আরজেডির তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেন সিপিএমের তিন শীর্ষ নেতা। যদিও সূত্রের খবর, বামেদের বেশি আসন ছাড়তে রাজি হননি লালুপুত্র। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে লিবারেশন ১৯টি আসনে লড়াই করে ১২ আসনে জয়ী হয়েছিল। সিপিএম ৪টি আসনে লড়াই করে ২টি আসনে এবং সিপিআই ৬টি আসনে লড়াই করে ২টি আসনে জয়ী হয়েছে। সার্বিকভাবে বামেরা ২৯টি আসনে লড়াই করে ১৬টি–তে জয়ী হয়েছিল। এই স্ট্রাইক রেটের কারণে এ বার লিবারেশন নিজে ১৯টি–র বেশি আসনে এবং সার্বিকভাবে বামেরা ৩৫–৪০টি আসনে লড়াই করতে চাইছে। কিন্তু বামাদের দাবিমতো আসন ছাড়তে রাজি নন লালুপুত্র। কারণ এবার আবার মহাজোটে যোগ দিচ্ছে ঝাড়খণ্ডের শাসকদল জেএমএম। তাছাড়া এবার নতুন মহাজোটে আসা ভিআইপির দাবিও মেটাতে হবে। এদিকে কংগ্রেস গতবারের থেকে ১২টি কম আসনে লড়াই করতে রাজি হয়েছে। এবার বিহারে হাত শিবির লড়বে ৫৮ আসনে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরজ পার্টি ৫১ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতেই শুরু হয়ে গিয়েছে অন্তর্কলহ। এদিন পাটনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ দেখায় প্রশান্ত কিশোরের কর্মী-সমর্থকরা। পটনায় দলীয় দপ্তরে বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে অশান্তি হয়েছে। কৈমূর জেলার ভবুয়ার বিদায়ী আরজেডি বিধায়ক ভারত বিন্দ বিজেপিতে যোগদানের কথা ঘোষণা করেছেন।