• শিক্ষার এ কী হাল! ভুলে ভরা চেক লিখে ভাইরাল হওয়া শিক্ষকের বরখাস্তের চিঠিতেও একাধিক বানান ভুল
    আজকাল | ১১ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘সাভেন থার্সডে সিক্স হারেন্দ্র সিক্সটি’, ৭৬১৬ টাকার একটি ব্যাঙ্ক চেকে এই ভুলে ভরা বানান লিখে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছিলেন হিমাচল প্রদেশের একটি উচ্চপ্রাথমিক স্কুলের অঙ্কনের শিক্ষক আত্তর সিং ভাইরাল হয়েছিলেন। সেই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। হাসির বিষয়, সেই বরখাস্তের চিঠিতেও একাধিক বানান ভুল। এরপরেই প্রশ্ন উঠছে, সরকারি স্কুলের পরিকাঠামোর যদি এই হাল হয়, পড়ুয়ারা তাহলে কী শিখবে।

    হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার রোনহাটের সরকারি স্কুলের ওই শিক্ষককে ৪ অক্টোবর বরখাস্ত করা হয়েছে। রাজ্য শিক্ষা বিভাগও ভুলগুলিকে ‘গুরুতর এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে তাঁর ব্যাখ্যা চেয়েছে। তাঁকে বলা হয়েছে যে, বরখাস্তের সময় তাঁর সদর দপ্তর সিরমৌর জেলার হরিপুরধরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থির করা হয়েছে।

    জেলা শিক্ষা আধিকারিক রাজীব ডোগরা বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “শিক্ষা বিভাগ এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তার কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়েছে।”

    সিরমৌরের স্কুল শিক্ষা (প্রাথমিক) বিভাগের উপ-পরিচালক রাজীব ঠাকুর, যিনি স্থগিতাদেশের আদেশ জারি করেছিলেন, তিনি বলেন, “বানান ভুল সাধারণত উপেক্ষা করা হয় এবং অপরাধীকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এই ক্ষেত্রে, শব্দ পরিবর্তন করা হয়েছে। থাউজ্যান্ডকে থার্সডে এবং হান্ড্রেডকে হরেন্দ্র লেখা হয়েছে। তাই, এই পদক্ষেপ।”

    উল্লেখযোগ্যভাবে, অভিযুক্ত শিক্ষককে জারি করা স্থগিতাদেশের আদেশে একাধিক বানান ভুল থাকার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর শিক্ষা বিভাগ নিজেই তদন্তের আওতায় চলে এসেছে।

    এ প্রসঙ্গে ঠাকুর বলেন, “সময়ের সীমাবদ্ধতা ছিল। আমরা তাড়াহুড়ো করে নোটিশ জারি করেছি। আমি ভুল স্বীকার করছি। তবে এগুলো বানান এবং টাইপিং ভুল। আমি খুঁজে বার করব কীভাবে এই ভুলগুলি হল। শিক্ষককে জারি করা স্থগিতাদেশের আদেশ যা সংশোধন করা যেতে পারে, কিন্তু চেকে তিনি যে ভুল করেছিলেন তা সংশোধন করা যায়নি। তিনি শব্দের গঠনই পরিবর্তন করেছিলেন।”

    গত ২৯ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষক আত্তার সিংয়ের লেখা চেকটি ভাইরাল হয়ে যায় সমাজমাধ্যমে। ভারতে শিক্ষার খরচ দ্রুত হারে বাড়ছে, যা বহু অভিভাবকের জন্য বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শহুরে এলাকায় উচ্চমাধ্যমিক স্তরের স্কুল ফি আকাশ ছুঁয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি যেই প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে তা হল শিক্ষার মান। এই চেকের ছবি দেখে সেই প্রশ্ন আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। 

    ভাইরাল পোস্টটিতে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এই যদি শিক্ষকের অবস্থা হয় তবে সেই বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ কী?” অন্য একজন লিখেছেন, “সমাজ ও দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই সমস্ত শিক্ষকেরা।” আবার কেউ লিখছেন, “সংরক্ষণ হটাও, দেশ বাঁচাও।” 

    উল্লেখযোগ্যভাবে, এই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে হিমাচলকে সম্পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ত্রিপুরা, মিজোরাম, গোয়া এবং লাদাখের পর পঞ্চম রাজ্য হিসেবে এই শিরোপা পেয়েছিল হিমাচল। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, রাজ্য সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের একটি টুইটে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয় রাম ঠাকুরের নাম ভুলভাবে জাও রাম ঠাকুর লেখা হয়েছিল।
  • Link to this news (আজকাল)