অয়ন ঘোষাল: জোড়া ঘূর্ণাবর্তে গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় গড়ে ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। আলিপুরে ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টি। সবথেকে বেশি বৃষ্টি সল্টলেক, নিউ টাউন এলাকায়। বৃষ্টির এই চোখ রাঙানি আর বেশিদিন নয়। অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দক্ষিণবঙ্গের এই নাছোড়বান্দা বৃষ্টি এবার বিদায়ের পথে। কাল ১২ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ এবং আগামী সপ্তাহের ১৮ অক্টোবর দক্ষিণবঙ্গ থেকে বর্ষা বিদায়ের পথ সুগম।
বিদায়ের আগে রাজ্যে কোথাও আর অতি ভারী বৃষ্টি ঘটাতে পারবে না মৌসুমী বায়ু। তবে জোড়া ঘূর্ণাবর্তের ছেড়ে যাওয়া প্রচুর জলীয় বাষ্পের হাত ধরে আজ শনিবারও বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণের ৮ জেলায়। বৃষ্টির পরিমাণ গতকালের থেকে অনেকটা কম থাকবে বলে পূর্বাভাস।
মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে হেমন্তের প্রবেশ। ভোরের দিকে শুষ্ক আবহাওয়া। শিরশিরানি ভাব। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রার লক্ষ্যনীয় পতন এখনই নয়।
উত্তরবঙ্গে:
একই কথা উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ক্রমশঃ কমবে বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টির আর কোনও সতর্কবার্তা নেই। আংশিক মেঘলা আকাশ। স্থানীয়ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। এই বৃষ্টি কিছু এলাকার কিছু অংশে সামান্য সময়ের জন্য হতে পারে। তাতে নতুন করে পরিস্থিতি অবনতির আর কোনও আশঙ্কা থাকছে না। কাল রবিবার থেকে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য তরাই এবং ডুয়ার্সের জেলায় ভোরের দিকে শুষ্ক আবহাওয়ার সঙ্গে হালকা কুয়াশা এবং শিরশিরানি ভাব।
দক্ষিণবঙ্গে:
আজ শনিবার দক্ষিণবঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামে বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা থাকবে। কাল রবিবার থেকে আর কোনও সতর্কতা নেই।
হেমন্তের আগমনে স্বভাবতই শীতের প্রত্যাশা বাড়ছে। তবে এক্ষুনি শীত আসছে না দক্ষিণবঙ্গে। অক্টোবরের একেবারে শেষে বা নভেম্বরের শুরুতে বঙ্গোপসাগরে মান্থা নামের একটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে একাধিক আন্তর্জাতিক আবহাওয়া গবেষণা মডেল। মৌসম ভবন বা আলিপুর আবহাওয়া দফতর এখনও পর্যন্ত এনিয়ে কোনও পূর্বাভাস বা সতর্কতা জারি করেনি। নভেম্বর মাসে প্রথম ১৫ দিনে একাধিক নিম্নচাপ আসতে পারে বঙ্গোপসাগরে। নভেম্বরের শেষ ১৫ দিনে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে একাধিক পশ্চিমী ঝঞ্ঝার বাধা আসতে চলেছে। সমস্ত বাধা কেটে গেলে ডিসেম্বরে দেশে জাঁকিয়ে শীত।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শীতের ভেলকি শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গেও। উত্তরের পার্বত্য জেলার পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলার পারদ নেমে যেতে পারে ৩ থেকে ৪ ডিগ্রিতে। পশ্চিমাঞ্চলের বাকি অংশে পারদ নামতে পারে ৬ থেকে ৯ ডিগ্রিতে। শীতের কামড় থেকে বাদ যাবে না গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গ। দীর্ঘমেয়াদি কনকনে ঠাণ্ডার পূর্বাভাস থাকছে সেখানেও।