জমা জল নামতে বন্যার আশঙ্কা গিয়েছে। কিন্তু কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গের কিছু অংশে নয়া আতঙ্ক এখন বন্যপশু! বৃষ্টি এবং হড়পা বানে বনাঞ্চল ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে অনেক জীবজন্তুর। প্রাণে বাঁচতে অনেকে ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। অনেকে নদীর জলে ভেসে ঢুকছে গ্রামে। তার পরেই হানা। শুধু কোচবিহারে বুনো শুয়োরের হানায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ বার গন্ডারের আক্রমণে দুই গ্রামবাসীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনেক চেষ্টার পরে ঘাতক গন্ডারটিকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করেছেন বন দফতরের কর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক দিন ধরে কোচবিহার-২ ব্লকের পুণ্ডিবাড়ি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল একটি গন্ডার। বৃহস্পতিবার ঘোকসাডাঙার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছে গন্ডারটি। বন দফতরের বিস্তর চেষ্টার পর শুক্রবার বাগে পাওয়া গিয়েছে তাকে। তবে তার আগে জখম হয়েছেন ২ জন।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, গত ৫ অক্টোবর উত্তরবঙ্গের চার জেলায় বন্যা পরিস্থিতিতে নদীর জলে ভেসে আসে গন্ডারটি। তার পর থেকেই এলাকায় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। গন্ডার ধরতে নামানো হয়েছিল কুনকি হাতি। অবশেষে শুক্রবার ভোরে পুণ্ডিবাড়ি এলাকায় দেখা মেলে তার। তবে ধরা পড়ার আগে দুই স্থানীয় বাসিন্দার উপর হামলা চালিয়েছে সে। গুরুতর জখম অবস্থায় দিলীপ দাস এবং বিভা কর নামে দুই গ্রামবাসীকে ভর্তি করানো হয়েছে কোচবিহারের একটি হাসপাতালে। ওই খবর পেয়ে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গন্ডারটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
কোচবিহারের ডিভিশনের এডিএফও বিজন কুমার নাথ বলেন, ‘‘জলদাপাড়ার টিম (বন দফতরের কর্মীরা) গত দু’-তিন দিন ধরে গন্ডারের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছিল। হয়েছিল নামানো হয়েছিল কুনকি হাতিকে। শুক্রবার ঘুমপাড়ানি গুলিতে গন্ডারটিকে কাবু করা হয়েছে। তবে তাকে জঙ্গলে ছাড়ার আগে শারীরিক পরীক্ষা করে নেব আমরা।’’ পরে তিনি জানিয়েছেন, গন্ডারটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। তাকে চিলাপাতা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গন্ডারটি পূর্ণবয়স্ক। তার আক্রমণে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার খরচ বন দফতর বহন করবে।