এ কেমন এসআইআর? ভোটার তালিকায় চোখ বোলাতেই চক্ষু ছানাবড়া, বিহারে জলজ্যান্ত মানুষগুলোর নামের পাশে লেখা 'মৃত! ...
আজকাল | ১১ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোট ঘোষমা হয়ে গিয়েছে। হাতে এক মাসেরও কম সময় রয়েছে। রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে বিহারে। এসবের মাঝেই প্রকাশ্যে এক ভূতুড়ে কাণ্ড। সৌজন্যে এসআইআর। খসড়া ভোটার তালিকা দেখে হতবাক বৈধ ভোটাররা। জলজ্যান্ত জীবীত মানুষগুলি তালিকায় নিজেদের নামের পাশে মৃত লেখা দেখে হতবাক!
অবাক করা এই ঘটনা ঘটেছে বিহারের ধোরাইয়া ব্লকের বাটসার গ্রামে। এই গ্রামের অন্তত পাঁচজন বাসিন্দা খসড়া ভোটার তালিকায় নিজেদের "মৃত" হিসেবে চিহ্নিতকরণ করেছেন। তবে, হাত-পা গুটিয়ে বসে নেই এঁরা। শুক্রবার, গ্রামের ২১৬ নম্বর বুথের বাসিন্দারা বিডিও অরবিন্দ কুমারের কাছে একটি স্মারকলিপি নিয়ে যান। সেই স্মারকলিপিতে লেখা ছিল, "মহাশয়, আমরা বেঁচে আছি।"
সমাজকর্মী ইন্দ্রদেব মণ্ডলের নেতৃত্বে, এই পাঁচজন ব্যক্তি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের আশঙ্কা, এই ত্রুটি বজায় থাকলে ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
অভিযোগ পেয়েই বিডিও অরবিন্দ কুমার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ওই পাঁচজনকে বিএলওকে ফর্ম-৬ পূরণ এবং নাম পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, কোনও যোগ্য ভোটারকে তাঁদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে না।
এসআইআর ঘিরে বিভ্রান্তি চরমে। এর আগে, চম্পারণের বাগাহি পঞ্চায়েতের ডুমরি গ্রামে ভোটার তালিকায় ১৫ জনকে "মৃত" দেখানো হয়েছিল।
২০১৮ সালে মৃত সনিয়া শরণ এবং ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মারা যান তাঁর ছেলে মনিত মণি। এই দুই নামও ভুল করে ভোটার হিসেবে খসড়া তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এমনকি ২০১৬ সাল পর্যন্ত মারা যাওয়া ব্যক্তিরাও এখনও ভোটার তালিকায় রয়ে গিয়েছেন!
গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন(এসআইআর) সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। ভোটার তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আবেদন করার জন্য বলে সুপ্রিম কোর্ট। এ বিষয়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় সাহায্য করার জন্য 'লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি'কে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছে, "আমরা চাই সকলে যেন আবেদন করার যথাযথ সুযোগ পান। কেন তাঁদের নাম বাদ পড়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ তাঁদের কাছে থাকা উচিত। এটি যেন কোনও এক বাক্যের দুর্বোধ্য নির্দেশ না-হয়।"
এর আগে বিহারের এসআইআর সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, কারণ না-জানিয়ে কারও নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন উদাহরণ থাকলে আদালতে জানানো যেতে পারে। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে আদালত বলে, "এই মামলার চূড়ান্ত রায় যা-ই হোক না কেন, একটি সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তা হল, বাদ যাওয়া সাড়ে তিন লক্ষের বেশি মানুষের আবেদন করার অধিকার।" সেই কারণেই বিহারের 'লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি'-কে এই নির্দেশ দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, ২৪৩ আসন বিশিষ্ট্য বিহার বিধানসভা নির্বাচন হবে দু'টি পর্যায়ে। ৬ এবং ১১ নভেম্বর ভোটদান হবে এবং ভোট গণনা ১৪ নভেম্বর।