নৈহাটি মানেই বড়মা। সেই জাগ্রত কালীপুজো এবার ১০২ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। দুই বছর আগে বড়মা’র কাছে পুজো দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বছর ফের দীপাবলিতে বড়মার মন্দিরে যাবেন তিনি। উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোতে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একাধিক মণ্ডপ দর্শন করেছিলেন সাংসদ। আলোর উৎসব দীপাবলিতেও এর ব্যতিক্রম হবে না। কালীপুজোর পরের দিন অর্থাৎ ২১ অক্টোবর বড়মার মন্দিরে যাবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিন প্রথা মেনে মায়ের কাঠামো পুজো সম্পন্ন হয়েছে। ভক্তদের সুবিধার্থে কালীপুজোর সাত দিন আগে থেকেই পুজো গ্রহণ করা হবে। বড়মার পুজোর ভিড় সামলাতে ও অভিষেকের সফরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রস্ততির জন্য নৈহাটির অরবিন্দ রোড ইতিমধ্যে সরেজমিনে খতিয়ে দেখেছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা। মন্দির কমিটির অফিসে এই নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেছেন তিনি। কোন রাস্তা দিয়ে অভিষেক আসবেন, লক্ষাধিক মানুষের ভিড় কীভাবে সামাল দেওয়া হবে, তার জন্য গোটা এলাকাটি ঘুরে পরিকল্পনা করেছেন পুলিশ কমিশনার।
মন্দির কমিটি সূত্রের খবর, মাটির প্রতিমার পাশাপাশি মন্দিরে নবপ্রতিষ্ঠিত কষ্টি পাথরের মূর্তিতেও পুজো দেবেন অভিষেক। এদিনই তাঁর হাতে বালেশ্বরী পাথরের ছোটো একটি কালীমূর্তি তুলে দিতে চায় মন্দির কর্তৃপক্ষ। তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দেওয়ার জন্য পাঠানো হবে বলে খবর। বড়মা কালীপুজো সমিতির সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ তারিখ আসবেন। তবে কখন আসবেন, সেই সময় এখনও ঠিক হয়নি। আমরা তাঁকে আপ্যায়ণ করতে সবরকমভাবে প্রস্তুত। পুজোতে পুলিশের পাশাপাশি বহু স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবেন মন্দির চত্বরে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সকল ভক্তরা নির্বিঘ্নে যাতে পুজো দিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হবে। বড়মায়ের কষ্টি পাথরের একটি মূর্তি অভিষেকের হাতে তুলে দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে আমাদের। মূর্তিটি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তার শুদ্ধিকরণও হয়েছে।’
এই বিষয়ে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ‘প্রতিবার সব ভিআইপিদের ক্ষেত্রেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কোন পথ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রবেশ করবেন এবং বেরোবেন, সে সব বিষয় আমরা দেখব।’
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে বড়মার মন্দির নতুন করে তৈরির পর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন অভিষেক। পরের বছর ২০২৪ সালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় মন্দির কর্তৃপক্ষ তাঁকে বড় একটি দেবীমূর্তির ছবি উপহার দিতে চাইলে মমতা জানিয়েছিলেন, তাঁর বাড়িতে এত জায়গা নেই। তাই ছোটো একটি মূর্তি তৈরি করে দিতে। মমতার কথা মতো মন্দির কমিটি শিল্পী শুভেন্দু সরকারকে দিয়ে বালেশ্বরী কালো পাথরের বড়মার মূর্তি তৈরি করিয়েছে। সেই মূর্তি এবছর অভিষেকের হাত দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য পাঠাতে চায় মন্দির কর্তৃপক্ষ।