রাজ্যের সব টোটোর রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক, জানিয়ে দিল পরিবহন দপ্তর, বেঁধে দেওয়া হল সময়সীমাও...
আজকাল | ১২ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে টোটো নামে পরিচিত ই-রিকশার চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য, রাজ্য পরিবহন দপ্তর এই ব্যাটারিচালিত বাহনগুলির রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করেছে। শনিবার পরিবহন বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমস্ত ই-রিকশার একটি ডিজিটালাইজড টেম্পোরারি টোটো এনরোলমেন্ট নম্বর (TTEN) থাকা উচিত এবং এই প্রক্রিয়াটি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টোটোর রেজিস্ট্রেশনের জন্য TTEN-এর অধীনে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। একটি নতুন পোর্টাল QR কোড ব্যবহার করে নিবন্ধিত ই-রিকশাগুলি ট্র্যাক করবে, যার ফলে কর্তৃপক্ষ যানবাহনের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এবং নতুন অবৈধ টোটোগুলিকে পথে নামা থেকে আটকাতে পারবে।
পরিবহন সচিব সৌমিত্র মোহন বলেছেন, “সরকার রেজিস্ট্রেশন বিহীন এবং অনিরাপদ ই-রিকশার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের স্থানীয় গ্যারেজ দ্বারা নির্মিত অনিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত ই-রিকশাগুলি শনাক্ত করে সেগুলিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ই-রিকশার অনেকগুলিই সেন্ট্রাল মোটর ভেহিক্যালস, ১৯৮৯ নির্দেশিকা মেনে চলে না। তাই জেলা কর্তৃপক্ষ সেই ইউনিটগুলিকে সিল করার জন্য নোটিশ জারি করবে যেগুলি নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুসরণ করে না। যারা এই নির্দেশিকা মেনে চলবে তাদের শুধু ই-রিক্সা তৈরির অনুমতি থাকবে।”
পরিবহন দপ্তর জানিয়েছে, নির্ধারিত প্রোটোটাইপ অনুসরণ করে যে ই-রিকশাগুলি তৈরি করা হয়নি সেগুলিকে রাজ্য এবং জাতীয় মহাসড়কে চলতে দেওয়া হবে না। স্থানীয় প্রশাসন এলাকায় চলাচলকারী ই-রিকশার তালিকা, মালিকদের নাম এবং তাদের রুট নির্ধারণ করবে। অননুমোদিত ই-রিকশার মালিকদের তাদের বর্তমান বাহন প্রতিস্থাপনের জন্য দুই বছর সময় দেওয়া হবে।
পরিবহন দপ্তর আরও জানিয়েছে, স্থানীয় সংস্থাগুলি দ্বারা বিক্রি করা ই-রিকশাগুলিও ডিলার সংস্থা, ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির অনুমোদন ছাড়া এমভি কর্তৃপক্ষ এবং এইচএসআরপি ফিটমেন্টের অনুমোদন ছাড়া অনুমোদিত হবে না। অনিবন্ধিত ই-রিকশার মালিকদের ছয় মাসের অস্থায়ী অনুমোদন নম্বরের জন্য ১,০০০ টাকা ফি দিতে হবে। পরবর্তীতে রেজিস্ট্রেশন নবায়নের জন্য ১০০ টাকা কম ফি দিতে হবে।
একজন পরিবহন কর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যে ১০ লক্ষেরও বেশি ই-রিকশা চলাচল করছে। তিনি আরও বলেন, “যদিও টোটো নামে পরিচিত ই-রিকশাগুলি স্থানীয় পরিবহনে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকার উৎসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রায়শই এমন খবর পাওয়া যায় যে এই ধরণের যানবাহন জাতীয় সড়কে যানজট সৃষ্টি করে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন খাঁড়া করে। আমরা তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার এবং তাদের একটি কাঠামোগত কাঠামোর আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি।”
পুজোর সময় যানজট এড়াতে শহরের অনেক বড় বড় রাস্তায় টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পুজোর এক মাস আগে থেকে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট দক্ষিণ বাঙুর, লেকটাউন এলাকায় টোটো চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। লেকটাউনের রাস্তা ধরে ভিআইপি রোডের দিকে টোটো চলাচলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু শহরাঞ্চলে নয়, জেলায় জাতীয় সড়কের উপর টোটো চলাচলের ফলে বারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টোটো চালকরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে হাইওয়েতে চলে আসছেন। ছোট ও হালকা গাড়ি হওয়ায় ভারী যানবাহনের সঙ্গে গতি মেলাতে না পেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষত রাতে টোটোতে আলো না থাকা, লাইসেন্সবিহীন চালক এবং অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাইয়ের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।