বন্যায় ভেঙে পড়া টিনের ঘরের চালে শুকোচ্ছে বই-খাতা! ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া অদিতি-শুভদীপরা
বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বন্যায় ভেঙে পড়েছে ঘর। জলে ভিজে নষ্ট হওয়া বইখাতা শুকোচ্ছে ভেঙে পড়া ঘরের টিনের চালে। তারই পাশে বসে পড়াশোনা চলছে দুর্গত ছাত্রছাত্রীদের। পড়ুয়া জলপাইগুড়ির রামসাই পঞ্চায়েতের সুকানদিঘির অদিতি কিংবা শুভদীপ রায়। প্রত্যেকের পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। ‘বর্তমান’-এর খবরের জেরে প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণসামগ্রী, বইখাতা নিয়ে পাশে দাঁড়ানোয়, সকলের ভালোবাসায় চোখে জল অদিতির। স্কুলব্যাগ, বইখাতা, পেন-পেন্সিল, খাবারদাবার ও অর্থসাহায্য পেয়ে খুশি শুভদীপ। ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তারা। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে বদ্ধপরিকর দু'জনেই। যদিও বন্যাবিধ্বস্ত ওই গ্রামে রয়েছে আরও অনেক অসহায় পরিবার। রয়েছেন বিশেষচাহিদা সম্পন্ন শিশু, অনাথ বালকও। দুর্দিনে তাদের কাছেও সাহায্য পৌঁছক, চাইছেন বাসিন্দারা। ময়নাগুড়ির বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু বলেছেন, "আমরা অদিতির হাতে বইখাতা, স্কুলব্যাগ, পোশাক তুলে দিয়েছি। বাকিদের পাশেও রয়েছি।" ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, "দুর্গত এলাকার একজন পড়ুয়ারও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে পুলিশ সবরকমভাবে তাদের পাশে থাকবে।"ময়নাগুড়ি থেকে রামসাইয়ের রাস্তা ধরে যাওয়ার পথে পানবাড়ি, বারোহাতি ছাড়িয়ে সুকানদিঘি। গ্রামে ঢুকতেই বিপর্যয়ের ছাপ স্পষ্ট। শনিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, দিনমজুর কৃষ্ণ রায়ের টিনের চালের ঘর বন্যায় একেবারে মাটিতে মিশে গিয়েছে। ভাঙা ঘরের চালে জলে ভেজা বইখাতা শুকোতে দিয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া তার ছেলে শুভদীপ। শুভদীপদের পাশেই বাড়ি অদিতির। বন্যার জলে বইপত্র সব ভেসে যাওয়ায় হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রী। একরাশ অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় প্রশ্ন তোলে, ‘আমি বোধ হয় আর পড়াশোনা করতে পারব না! কীভাবে করব, বইখাতা তো ভেসে গিয়েছে।’ অদিতির সেই করুণ আর্তি প্রকাশিত হয় ‘বর্তমান’-এ। এরপরই প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্গত ওই ছাত্রীর পাশে দাঁড়ায়। উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ থেকেও অদিতি, শুভদীপের জন্য কিছু অর্থ সাহায্য ও পড়াশোনার সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
Link to this news (বর্তমান)