বিহারে নির্বাচন: শরিকদের চাপে মাথা নোয়াতে বাধ্য হচ্ছে বিজেপি
বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সেই রামও নেই, সেই অযোধ্যাও নেই। এই আপ্তবাক্যই স্মরণে আসছে বিহার নির্বাচনে এনডিএ জোটের আসন সমঝোতার গতিপ্রকৃতি দেখে। ২০২০ সালে যে চিরাগ পাসোয়ানকে চাহিদামতো আসন না দেওয়ায় তিনি এনডিএ জোট পরিত্যাগ করে এককভাবে ১৩৫ আসনে লড়াই করেছিলেন, এবার সেই চিরাগ পাসোয়ানকে তুষ্ট করতে মরিয়া বিজেপি ক্রাইসিস ম্যানেজাররা। কারণ একটাই। ২০২০ সালে কেন্দ্রে ছিল নরেন্দ্র মোদির সংখ্যাগরিষ্ঠতা। এখন আর সেই গরিষ্ঠতা নেই। তাই পাঁচ বছর আগে চিরাগ পাসোয়ান জোটে থাকলেন অথবা চলে গেলেন, বিজেপির কাছে কিছুই যায় আসেনি। এবার চিত্র ভিন্ন। কেন্দ্রের সরকার যেমন জোট শরিকদের সহায়তায় চলছে, তেমনই আবার চিরাগের দলের ভোটব্যাঙ্ক ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ২০২০ সালে চিরাগ পাসোয়ান বেছে বেছে নীতীশ কুমারের দলের বিরুদ্ধেই প্রার্থী দিয়েছিলেন। ২৫টি আসনে ভোট বিভাজনের জেরে জেডিইউকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। গত লোকসভা ভোটে চিরাগ পাসোয়ানের স্ট্রাইক রেট ১০০। পাঁচটি আসন তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। পাঁচটিতেই জয়ী হয়েছে তাঁর দল। আর তাই এবার চিরাগের পেশী শক্তি ও কণ্ঠ বেশি জোরালো। তিনি ৪০ থেকে ৪৫ আসন দাবি করেছেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিগত ৪৮ ঘণ্টা ধরে দর কষাকষি করে অবশেষে চিরাগকে জোটে ধরে রাখার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন ২৬টি পর্যন্ত বিজেপি রাজি। এখনও চিরাগ কোনও সবুজ সংকেত দেননি। তবে চিরাগের চাপে বিজেপি এবং জেডিইউ যে নত হচ্ছে, তা অনেকটাই স্পষ্ট।
এই প্রবণতা দেখে এবার জিতনরাম মাঝির দল ১৫টি আসন চেয়ে বসেছে। তবে তাঁকে ৮টি আসন দেওয়া ঠিক হয়েছে। ওমপ্রকাশ রাজভড়, উপেন্দ্র কুশওয়ারাও জানাচ্ছেন তাঁদের বেশি আসন দিতে হবে। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজেপি এক কথায় দাবিদাওয়া অগ্রাহ্য করার মতো অবস্থায় আর নেই। তাই বুঝিয়ে সুঝিয়ে সকল শরিককে জোটে রাখতে মরিয়া তারা। কারণ এবারের ভোট রীতিমতো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ১ থেকে ৩ শতাংশ ভোটের হেরফেরও বড়সড় বদল ঘটিয়ে দেবে। শনিবার সকাল থেকে দিল্লিতে জগৎপ্রকাশ নাড্ডার বাসভবনে বিজেপি কোর কমিটির বৈঠক হয়। অমিত শাহ, নাড্ডা, বিনোদ তাওড়েরা বৈঠক করেন দুই দফায়। বৈঠকের পর বলা হয়েছে, জটিলতা কিছুই নেই। শীঘ্রই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।