সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুটানের ডলোমাইট কাদা মাটি মিশ্রিত পলি পড়ে আলিপুরদুয়ারের শালকুমারে বিঘার পর বিঘা আমন ধান নষ্ট হয়েছে। আমন ধানের সঙ্গে পলিতে নষ্ট হয়েছে কলা, সুপারি বাগান ও বিঘার পর বিঘা আনাজ সবজি ফসলও। জমিতে পলি পড়ার ভালো খারাপ দু’টি দিকই আছে। কিন্তু শালকুমারের মাটিতে ডলোমাইটের সঙ্গে ভুটানের অন্য কোনও কেমিক্যাল মিশেছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা জরুরি বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। সেজন্য পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের নির্দেশে শনিবার বিধানচন্দ্র কষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা শালকুমারে এলেন।
কৃষি বিজ্ঞানী মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন বিজ্ঞানী এদিন শালকুমারে আসেন। সঙ্গে ছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা কৃষিদপ্তরের সহ অধিকর্তা সর্বেশ্বর মণ্ডল ও বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার শালকুমার-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন মৌজায় গিয়ে ডলোমাইট মিশ্রিত পলি মাটির নমুনা সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। আমন ধানের সঙ্গে সুপারি ও কলা বাগানের মাটির নমুনাও তাঁরা সংগ্রহ করেন। যদিও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা কৃষি বিজ্ঞানীরা কেউই এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
পরে জেলা কৃষি দপ্তরের সহ কৃষি অধিকর্তা সর্বেশ্বর মণ্ডল বলেন, ডলোমাইট মিশ্রিত শালকুমারের ওই পলি মাটির নমুনা বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পাঠানো হবে। ল্যাবের রিপোর্ট আসার পর বোঝা যাবে শালকুমারে ডলোমাইট মিশ্রিত পলি পড়া মাটিতে ভুটানের অন্য কোনও কেমিক্যাল মিশেছে কি না। জমিতে পলি পড়ার ভালো ও খারাপ দু’টি দিকই আছে। কিন্তু শালকুমারে পড়া পলিতে ভুটানের ডলোমাইট মিশে আছে। সেজন্য মাটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর বোঝা যাবে এই মাটিতে আগামী দিনে ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কোনও সমস্যা হবে কি না। কৃষকদের অযথা দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।
শালকুমার-১ ও ২ পঞ্চায়েতে শিসামারা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছিল বিঘার বিঘা আমন ধানের জমি। দু’টি পঞ্চায়েতে সাতটি মৌজার আমন খেত চাপা পড়েছে ভুটানের ডলোমাইট মিশ্রিত পলিতে। শুধু আমনই নয়। এলাকার সুপারি, কলা বাগানের সঙ্গে আনাজ সবজি খেতেও এক থেকে দেড় ফুট পর্যন্ত ডলোমাইট মিশ্রিত পলি পড়েছে। এই বিপর্যয় দেখার পর হাহাকার শুরু হয়েছে এলাকার কৃষকদের মধ্যে। কৃষকদের দুশ্চিন্তা তাড়া করছে আগামী দিনে এই মাটিতে ফসল হবে কি না। নিজস্ব চিত্র।