• বয়রাকালীর ভোগে শোল, বোয়াল সহ ৫ রকমের মাছ
    বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • মৃন্ময় বসাক, কালিয়াগঞ্জ: জাঁকজমক না থাকলেও নিষ্ঠা সহকারে প্রতিবছর কালী মায়ের আরাধনা হয় কালিয়াগঞ্জ বয়রা কালী মন্দিরে। কালিয়াগঞ্জ শহরে  রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে এই মন্দির। বহু বছর ধরে এখানে পুজো হয়ে আসছে। 

    মন্দির কমিটির  যুগ্ম সম্পাদক বিদ্যুৎ বিকাশ ভদ্র বলেন, প্রথমে মায়ের মাটির মন্দির ছিল। পরে পাকা মন্দির নির্মাণ করা হয় রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে। ১৯৯৮ সালে কালিয়াগঞ্জবাসীর প্রচেষ্টায় দেবীর অষ্টধাতুর  বিগ্রহ তৈরি হয়।  পুজোর সময় অষ্টধাতুর বিগ্রহে যখন স্বর্ণালংকার পরিয়ে দেওয়া হয়, তখন মা বয়রাকে মনে হয় যেন সাক্ষাৎ দেবী। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে বার্ষিক পুজো দিতে আসেন। বিদ্যুৎ বিকাশ ভদ্র বলেন,   কালীপুজার রাতে শোল, বোয়াল সহ  ৫ রকমের মাছ, ৫ রকমের ভাজা সবজি ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। পরে সেই ভোগ ভক্তদের বিতরণ করা হয়। পাশাপাশি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে নরনারায়ণ সেবাও দেওয়া হয়। আগে বলিপ্রথা চালু থাকলেও করোনা পরিস্থিতির পর তা বন্ধ। 

    এই পুজোকে কেন্দ্র করে অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। অনেকে বলেন, কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতি নদীর তীরে বয়রা গাছের তলায় কালীপুজো শুরু হয়েছিল। তখন শ্রীমতি নদীতে অনেক জল ছিল।  বড় নৌকা গুদরীবাজার ঘাটে এসে লাগত। শোনা যায়, সেই সময় নদীপথে কালিয়াগঞ্জে যে সমস্ত মানুষ বাণিজ্যের জন্যে আসতেন তাঁরাই নদীর তীরে একটি জঙ্গলের মাঝে বয়রা গাছের তলায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। 

    আবার অনেকে বলেন, নদীর ধারে জঙ্গলে থান বানিয়ে ডাকাতদল শক্তির আরাধনা করত।  পরবর্তীতে  কালিয়াগঞ্জ থানা সংলগ্ন এলাকায় কালী মায়ের পুজো শুরু হয়। কালী পুজোর রাতে মা বয়রা পরিক্রমায় বের হতেন। সেই সময় অনেকেই তাঁর পায়ের নূপুরের আওয়াজ শুনতে পেতেন।   

    কালিয়াগঞ্জের রাজনন্দিনী বয়রা কালী দর্শন মাত্রই মানুষের মন শান্তি হয়ে যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। তাই পুজোর দিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বিহার, বাংলাদেশ থেকেও ভক্তরা পুজো দিতে মন্দিরে ছুটে আসেন। কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, বয়রা কালী মন্দিরে পুজো দিতে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। আগে থেকেই বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)