• হলং পিলখানায় আনা হল মেচি নদী থেকে উদ্ধার ১৫ দিনের হস্তিশাবককে
    বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: দুর্যোগের পর পাহাড় তরাই ডুয়ার্স ক্রমশ ছন্দে ফিরছে। আর দুর্যোগের পরেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বিখ্যাত হলং পিলখানায় শুক্রবার রাতের দিকে নতুন অতিথি এল। ৫ অক্টোবর কার্শিয়াং বন বিভাগের মেচি নদীতে ভেসে আসা ১৫ দিন বয়সি একটি হস্তিশাবককে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হল জলদাপাড়ার হলং পিলখানায়।

    কার্শিয়াং বন বিভাগের তারাবাড়ির কাছে মেচি নদীতে ভেসে আসা হস্তিশাবকটিকে উদ্ধার করা হয় ওই নদীর ভাটিতে মনিরামজোত এলাকায়। ভারত, নেপালের স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মীদের প্রচেষ্টায় উদ্ধার হয় শাবকটি। তারপরেই নতুন যুদ্ধ শুরু হয় কার্শিয়াং বন বিভাগের বনকর্মীদের। সেই যুদ্ধ হল দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শাবকটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। সেজন্য শাবকটিকে নিয়ে যাওয়া হয় কার্শিয়াংয়ের পাথরঘাটা রেঞ্জের কলাবাড়ি বিটে। কিন্তু মানুষের সংস্পর্শে আসায় শাবকটিকে হাতির দল বা তার মা হাতি আর ফিরিয়ে নেয়নি। বনকর্মীরা বহু চেষ্টা করেও শাবকটিকে হাতির দলে ফিরিয়ে দিতে পারেননি। এদিকে, সময় ও দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শাবকটি মায়ের দুধের অভাবে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। তাই বনদপ্তর আর ঝুঁকি নেয়নি। চিকিৎসা ও দুধ খাওয়ানোর জন্য শাবকটিকে নিয়ে আসা হয়েছে দেশের সেরা পিলখানা জলদাপাড়ার হলং পিলখানার আইসোলেশন ওয়ার্ডে। 

    জলদাপাড়ার বন্যপ্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা বলেন, হস্তিশাবকটি সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। এখানে শাবকটির চিকিৎসা চলছে। আপাতত শাবকটিকে গুঁড়ো দুধের সঙ্গে ইমিউনিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পর্যবেক্ষণের জন্য শাবকটিকে হলং পিলখানার আইসোলেশন ওয়ার্ডে আগামী তিন সপ্তাহ রাখা হবে।

    প্রখ্যাত হস্তি বিশারদ পার্বতী বড়ুয়া বলেন, মানুষের স্পর্শ লাগলে শাবককে তার মা হাতি আর ফিরিয়ে নেয় না। এটাই হাতি সমাজে দস্তুর। জলদাপাড়ার হলং পিলখানা দেশের সেরা পিলখানা। এখানে শাবকটির চিকিৎসার জন্য সেরা পরিকাঠামো ও আইসোলেশন ওয়ার্ড আছে। আশা করছি মেচি নদী দিয়ে ভেসে আসা ওই শাবকটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। শাবকটি চিকিৎসায় সাড়া দেওয়ায় খুশি জলদাপাড়া কর্তৃপক্ষ। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, উদ্ধার হওয়া শাবকটির চিকিৎসায় দক্ষ মাহুতদের নিয়োগ করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী চিকিৎসকরাও দফায় দফায় শাবকটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখছেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)