প্রতিবন্ধীদের জন্য সর্বভারতীয় আইটিআই ট্রেড টেস্টে প্রথম কান্দির দৃষ্টিহীন বাবলু
বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: প্রতিবন্ধীদের জন্য সর্বভারতীয় আইটিআই ট্রেড টেস্টে প্রথম হলেন কান্দির বাবলু হালদার। দৃষ্টিহীন যুবকের বাড়ি কান্দি ব্লকের উগ্রভাটপাড়ায়। ইটের দেওয়াল ও টালির চালা দেওয়া ঘরে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকেন। এহেন সাধারণ পরিবারের ছেলে বাবলু ট্রেড টেস্টে প্রথম হওয়ার পর দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। এতে আপ্লুত বাবলুর পরিবার।
জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন বাবলু। ছোটবেলা থেকে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমিতে পড়াশোনা করেছেন। সেখান থেকেই ব্রেইল পদ্ধতির সাহায্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। পরে অন্য ইন্সটিটিউট থেকে বিএ পাশ করেন। এরপর ২০২৩-’২৫শিক্ষাবর্ষে ফের রামকৃষ্ণ মিশনে প্রতিবন্ধী আইটিআই কোর্সে ভর্তি হন। তাঁর ট্রেড ছিল মেটাল কাটিং অ্যাটেন্ড্যান্ট।
গত ৪সেপ্টেম্বর বাবলুর ট্রেড টেস্ট ছিল। সেপ্টেম্বরের শেষদিকে রেজাল্ট বের হলে দেখা যায়, দেশের ৪৬জন টপারের মধ্যে বাবলুও রয়েছেন। এরপর ৪অক্টোবর দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন। সম্প্রতি দিল্লি থেকে কান্দিতে বাড়ি ফেরেন বাবলু।
এরপর থেকে বাবলুদের বাড়িতে ভিড় লেগেই রয়েছে। পড়শি থেকে শুরু করে গ্রামের সবাই তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে যাচ্ছেন। বাবলু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পাব, ভাবতেই পারিনি। আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। তবে পুরস্কারের সঙ্গে রোজগারের ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো। এখন চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনও একটি চাকরি পেলে ভালো হয়।
পরিবারের ছোট ছেলে বাবলু। তিন দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাবলুর বাবা নীলাদ্রি হালদার বলেন, আমরা দিনমজুর। কোনওমতে সংসার চলে। এখন আর খাটার শক্তিও নেই। ছেলে যখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে রোজগার করতে পারবে, তখনই ওর কষ্ট সার্থক হবে। তাই ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা চিন্তা রয়েছে। বাবলুর মা কাজল হালদার বলেন, ছেলের যোগ্যতা ও আত্মবিশ্বাস দু’টোই আছে। আমাদের বিশ্বাস, ও একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবেই। • নিজস্ব চিত্র