• ডাক্তারি ছাত্রীকে গণধর্ষণ, অভিযুক্ত সহপাঠী ও তাঁর বন্ধুরা! দুর্গাপুরে চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, দুর্গাপুর ও নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সহপাঠী ও তার বন্ধুদের হাতেই গণধর্ষণের শিকার ডাক্তারি ছাত্রী। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরে। নির্যাতিতা শহরের শোভাপুর এলাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এমবিবিএস পড়ুয়া। বাড়ি ওড়িশার জলেশ্বরে। শনিবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর বাবা। জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে ওই কলেজেরই এক ‘সিনিয়র’ এমবিবিএস পড়ুয়া ও তার বন্ধুরা মিলে তাঁর মেয়েকে গণধর্ষণ করেছে। পাশাপাশি তাঁকে আটকে রেখে মোবাইল ফোন ও নগদ ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। বর্তমানে ওই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই নির্যাতিতার চিকিৎসা চলছে। ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে এদিন সকাল থেকে কলেজ চত্বরে ধরনায় বসেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্ত ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজ চলছে। শনিবার রাতে ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট স্বাস্থ্যদপ্তরে পেশ করেছে কর্তৃপক্ষ।

    ধর্ষণের এই ঘটনাকে অভয়া কাণ্ডের সঙ্গে জুড়ে আসরে নেমেছে রাম-বাম। বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলের নেতৃত্বে বার্নপুরে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি। সিপিএমপন্থী চিকিৎসক সংগঠন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম আবার অভয়া কাণ্ডের জের টেনে এই ঘটনাকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতির প্রমাণ বলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ চেয়েছে। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝিও ঘটনায় জড়িতদের কড়া শাস্তির দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। ডিজিপির কাছে ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। যদিও গোটা বিষয়টিকে ‘বিভাজনের রাজনীতি’ দাবি করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘ধর্মের রাজনীতি নয়, রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা রাখুন।’ নির্যাতিতার পরিবার অবশ্য মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘রাত ১০টায় মেয়ের সহপাঠীরা ফোন করে ঘটনার কথা জানায়। মেয়ের সঙ্গে পাশবিক নির্যাতন হলেও, কলেজ কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করেনি।’ যদিও প্রেস বিবৃতি জারি করে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।  

    হাসপাতালে সূত্রের খবর, অভিযুক্তও ওই মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার সঙ্গে ওই ছাত্রীর ‘বন্ধুত্ব’ ছিল। ঘটনার দিন রাত ৮টা নাগাদ সে ক্যাম্পাসের বাইরে ফুচকা খাওয়াতে নিয়ে যায় নির্যাতিতাকে। সেখান থেকে দু’জনে যায় কলেজের পিছনের নির্জন মোহনবাগান সরণিতে। সেই রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্তই ঘটনাস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছাত্রকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে রাতে অভিযুক্তের সঙ্গে কলেজ লাগোয়া নির্জন এলাকায় কেন গেলেন ওই ছাত্রী? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
  • Link to this news (বর্তমান)