বিক্রম দাস ও নান্টু হাজরা: পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ৪৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করল এনফোর্সমেন্টে ডিপার্টমেন্ট। তল্লাশিতে ডিজিটাল-সহ বহু নথি উদ্ধার হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন অপরাধমূল নথিও। তল্লাশি চালানো হয় দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর অফিসেও। সবেমিলিয়ে শুক্রবার মোট ১৩ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। এমনটাই দাবি ইডির।
পুরসভার কর্মী নিয়োগ দুর্নীতিতে গতকাল সুজিত বসুর সল্টলেকের অফিসে তাল্লাশি চালায় ইডি। পাশাপাশি দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নেতাই দত্তের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। এছাড়াও একাধিক হোটেলেও তল্লাশি চালানো হয়। ইডির তরফে দাবি করে হয়েছে, ওই তল্লাশি অভিযানে মোট ৪৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। বেশকিছু সম্পত্তির নথি ও ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, যেসব নথি ও ডিভাইস উদ্ধার হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে কোনও অসংগতি মিললে যেসব জায়গায় ওইসব নথি উদ্ধার হয়েছে সেইসব জায়াগ কর্ণধারদের ডাকা হতে পারে।
উল্লেখ্য, ইডির নজরে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩০০ বেশি কর্মী নিয়োগ। ২০১৪ থেকে ২০২০ পর্যন্ত এইসময়েই চাকরি চুরির অভিযোগ উঠেছে। দমকল মন্ত্রী অফিস, পুরসভার কর্তার বাড়িতে তল্লাশির পর ইডি সূত্রে চাঞ্চল্য়কর দাবি করা হয়েছে। সুজিত বসুর অফিসে প্রায় সাড়ে ১৯ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। তাঁর ছেলে সমুদ্র বসুর ধাবায় প্রায় ২১ ঘণ্টা তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশি শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এজেন্সি আধিকারিকদের হাতে বেশকিচউ নথি ও ব্যাগ দেখা যায়। ২০২০ সালে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় ইন্টারভিউ ছাড়াই ২৯ জনকে নিয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে দক্ষিণ দমদম পুরসভায় নিয়োগ হয় ৩২৯ জনের। এর মধ্যে ২০২০-র মার্চে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ। ইডির দাবি ওইসব নিয়োগ অনিয়ম হয়েছে।
এদিকে, পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সন্তুষ্ট নয় বঙ্গ বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য বলেন, অনেক দিন ধরেই পুর দুর্নীতির তদন্ত চলেছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভা, বরাহনগরে যান তৃণমূলের লোকরাই বলে দেবে মুর্শিদাবাদের লোকের চাকরি হয়েছে, নদিয়ার লোকের চাকরি হয়েছে।
পাল্টা তৃণমূলের বক্তব্য, আদালতে তথ্য় কেন জমা দিচ্ছে না ইডি? দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র অনুযায়ী একটা গল্প ভাসিয়ে দিচ্ছেন। ওঁদের কাজ তো আদালতে গিয়ে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে দোষীদের শাস্তি বিধান করা। ইডি কি সেটা করতে পাচ্ছে? না করে শুধু পলিটিক্যাল ন্যারেটিভ তৈরি করছে বিজেপির পক্ষে।