• বাম আমলে RG Kar-এ পর্ণোগ্রাফি র‌্যাকেট! ২৪ বছর পর তোলপাড় সোশাল মিডিয়া
    প্রতিদিন | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: আর জি কর কাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে শোরগোল ছড়িয়েছিল বাম দলগুলি। অথচ তাদের জমানাতেই ওই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে রমরম করে চলত পর্নোগ্রাফি র‌্যাকেট! আর সেই চক্রের বলি হয়েছিলেন সেখানকার ডাক্তারি পড়ুয়া? তাঁর রহস্যমৃত্যুর পিছনে ছিল যৌন কেলেঙ্কারি? এনিয়ে সোশাল মিডিয়ায় করা পোস্টে ফের প্রকাশ্যে এসেছে ২৪ বছরের পুরনো এক নৃশংস-পাশবিক ঘটনা, যা লজ্জায় বামেদের মাথা হেঁট করে দেওয়ার মতোই ব্যাপার।

    নতুন করে আর জি করে পর্ন-র‌্যাকেট নিয়ে আলোড়নের নেপথ্যে নীতীশ রাজপুত নামে এক সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার বা সমাজমাধ‌্যমের তারকা। তিনিই ২০০১ সালের সেই ঘটনা তুলে ধরেছেন। সেবার আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজের বেলগাছিয়া হস্টেলে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া সৌমিত্র বিশ্বাসের দেহ। এই ঘটনার কিছুদিন আগে বারাকপুরের বাসিন্দা সৌমিত্র তাঁর অভিভাবককে জানিয়েছিলেন, আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজের কিছু গূঢ় রহস‌্য তিনি জেনে ফেলেছেন।

    ২০০১-এর ২৫ আগস্ট সকালে নিজের ঘরে গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায় সৌমিত্রকে। তৎকালীন পুলিশ প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত‌্যা’ বলে জানায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও একই কথা বলে। কিন্তু সৌমিত্রর অভিভাবকরা জানান, তিনি যথেষ্ট হাসিখুশি ছিলেন। এটা আত্মহত‌্যা হতেই পারে না। এরপরেই সৌমিত্রর মা-বাবার তরফে চিঠি দেওয়া হয় তৎকালীন রাজ‌্যপালকে। নীতীশ তাঁর ছোট্ট ভিডিও বার্তায় সমাজমাধ‌্যমে জানিয়েছেন, আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজে সেসময় এসএফআইয়ের রমরমা। প্রভাব খাটিয়ে কীভাবে তারা গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছিল। মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে নীতিশের সেই ‘কন্টেন্ট’-এ ৩৭ হাজার লাইক পড়েছে । ভিডিওর নিচে কয়েকশো মন্তব‌্য। ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছে সমাজমাধ‌্যমে। নেট-নাগরিকরা লিখেছেন, এত বড় লজ্জা! অথচ সেসময় তৎকালীন রাজ‌্য সরকার মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিল।

    সৌমিত্রর মা-বাবার দাবি মেনে তদন্ত শুরু করেছিল সিআইডি। সেসময় কয়েকশো ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাতে উঠে আসে আর জি কর মেডিক‌্যাল কলেজে সক্রিয় পর্নোগ্রাফি র‌্যাকেটের বিষয়টি। সূত্রের খবর, সেসময় হাসপাতালের এসএফআই সংগঠনের নেতা ছিলেন সুবর্ণ গোস্বামী, এখন যিনি বামঘেঁষা চিকিৎসকদের সংগঠনের হর্তাকর্তা। সৌমিত্রর মা সবিতাদেবীর অভিযোগ ছিল, ‘‘ছেলে আর জি করের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরে চলা পর্নোগ্রাফি চক্রের ব্যাপারে জেনে গিয়েছিল। তাঁর ব্যাচের একটি মেয়ের ছবি বিকৃত করা হয়েছিল। সেই কথা মেয়েটিকে জানাতেই চক্রের হোতারা খবর পেয়ে যায়। এর পরেই ছেলেকে খুন হতে হয়।’’ নতুন করে এই ঘটনা সামনে আসতেই অস্বস্তিতে বাম নেতারা।

    সূত্রের খবর, এই ঘটনার সিআইডি রিপোর্টেও পর্নোগ্রাফির উল্লেখ ছিল। উদ্ধার হয়েছিল পর্নোগ্রাফি শুটিংয়ের ট্রাইপড, লাইট রিফ্লেক্টার-সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। কিন্তু ওটুকুই। তারপর আর কিছুই জানা যায়নি। সে সময় সংবাদমাধ‌্যমে এক সিআইডি আধিকারিক জানিয়েছিল, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষ তদন্তের বিষয়ে সহায়তা করছেন না। সহযোগিতা করছে না স্টুডেন্ট ইউনিয়নও।’’ বাম আমলের অন্ধকার ইতিহাসে বর্তমানের আলো পড়তেই ঢোক গিলছেন বামঘেঁষা চিকিৎসকরা। বলছেন, ‘‘পুরনো ঘটনা, মনে নেই।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)