আজকাল ওয়েবডেস্ক: জন্মদিন উদযাপন করতে গিয়েছিল ভিন রাজ্যে। সেখানেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু নাবালিকার। তার শেষকৃত্যের আগেই হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন সকলে। মেয়ের শেষকৃত্যের আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক কাটলেন বাবা। চিতার সামনেই রাখা ছিল কেক, ফুল, বেলুন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ের কাওয়ারধা জেলায়। মেয়ের শেষকৃত্যের সময়েই তার জন্মদিনের কেক কাটতে দেখা গেছে তার বাবাকে। গত ৫ অক্টোবর পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১০ বছরের নাবালিকার। মেয়ের শেষকৃত্যের আগে নিথর দেহের পাশেই জন্মদিনের কেক কাটেন বাবা। যে দৃশ্য দেখে ডুকরে কেঁদে ফেলেন স্থানীয়রাও।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চিলফি ভ্যালির কাছে কাওয়ারধা - জবলপুর জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। একটি এসইউভি গাড়ির সঙ্গে ট্রাকের সজোরে সংঘর্ষ হয়। সেই গাড়িতেই বাংলার পর্রযটকরা ছিলেন। কানহা ন্যাশনাল পার্কে গিয়ে সবচেয়ে খুদে সদস্য, ওই নাবালিকার জন্মদিন উদযাপন ছিল উদ্দেশ্য।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান নাবালিকা ও তার মা। মৃত নাবালিকার দিদিও গুরুতর আহত হয়েছিল। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে। নাবালিকার বাবা সেই সময় কলকাতায় ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ৭ অক্টোবর সেখানে পৌঁছন। স্ত্রী ও মেয়ের মৃতদেহ শনাক্ত করে একাই শেষকৃত্যের আয়োজন করেন।
অচেনা শহরে একা একাই ওই ব্যক্তি শেষকৃত্যের আয়োজন করছিলেন দেখে, স্থানীয়রা সাহায্যের জন্য ছুটে আসেন। শোকে মূহ্যমান ওই ব্যক্তি তখনই সকলকে জানান, মেয়ে সবসময় চাইত, সকলে মিলে তার জন্মদিন উদযাপন করুক। মেয়ের ইচ্ছের কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। স্থানীয়রাও চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি।
এরপর শেষকৃত্যের আগেই নাবালিকার জন্য কেক, বেলুন, ফুল নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। চিতায় আগুন ধরানোর আগে মেয়ের দেহের পাশে 'শুভ জন্মদিন'-এর শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক কাটেন তিনি। এরপরই দেহটি দাহ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ভিন রাজ্য থেকে বাংলায় ফেরার ট্রেনে ওঠার আগেই সব শেষ। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন বাংলার পাঁচ পর্যটক। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অনেকে। দুর্ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ভিন রাজ্যে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তিশগড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুর্ঘটনাটি ঘটে কবীরধাম জেলায়। এসইউভি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ট্রাকের। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। অনেকেরই শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, গাড়ির সকল সদস্যরাই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন। মধ্যপ্রদেশে ঘুরতে গিয়েছিলেন। কানহা ন্যাশনাল পার্ক থেকে ফেরার পথে বিলাসপুর থেকে ট্রেন ধরার কথা ছিল। গাড়িতে তাঁরা বিলাসপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে কলকাতা গামী ট্রেনে ওঠার কথা ছিল তাঁদের। স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। গাড়িটিতে চালক সহ মোট ১০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলেই তিনজন মহিলা, এক ব্যক্তি এবং এক নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে আরও দুই কিশোরী রয়েছে। গুরুতর আহতদের রাইপুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।