• হুগলির পাণ্ডুয়ায় সমবায় ভোটে একতরফা জয় বামেদের! উড়ল লাল আবির
    আনন্দবাজার | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • হুগলির পাণ্ডুয়ায় এক সমবায় সমিতির নির্বাচনে জয় পেলেন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। শনিবার পাণ্ডুয়ার শ্রীরামবাটি কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির নির্বাচন ছিল। সেখানে ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয়ী হন সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা। একটিতে জয়ী হন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থী। আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে এই সমবায় ভোটের ফলাফল অক্সিজেন জোগাচ্ছে বামেদের। অন্য দিকে ভোটের এমন ফলের কারণ বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের একাংশ।

    সমবায় নির্বাচনগুলিতে কোনও রাজনৈতিক দল সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না। রাজনৈতিক শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা ভোটে লড়েন। প্রায় দশ বছর পরে শনিবার এই সমবায়ে নির্বাচন হল। গত দশ বছর ধরে শ্রীরামবাটি সমবায়টি ছিল তৃণমূল সমর্থিত প্যানেলের হাতে। এই সমবায়ে মোট ৭৩২ জন ভোটার রয়েছেন। শনিবারের নির্বাচনে তৃণমূল এবং বাম সমর্থিত প্যানেল ১২টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। বিজেপি সমর্থিত প্যানেল প্রার্থী দিয়েছিল ছ’টি আসনে। তবে বিজেপি সমর্থিত প্যানেল কোনও আসনেই জয়ী হতে পারেনি।

    শনিবার সমবায় নির্বাচনের ফল প্রকাশ্যে আসার পরে পাণ্ডুয়ার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বাম নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, “চার মাস আগে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৃণমূল করতে দেয়নি। তারা জানত, তাদের উপর মানুষের ভরসা নেই। দশ বছর ধরে তৃণমূল এই সমবায় দখল করে রেখেছিল। সমবায়কে লুট করেছে। এই সমবায়কে দুর্নীতিমুক্ত করে পরিচালনা করতে বাম প্রার্থীদের ভোট দিয়েছে ক্ষেতমজুর, কৃষক, বর্গাদার এবং পাট্টাদারেরা। মানুষের পরিবর্তন হচ্ছে, তা এটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে। এই জয় আগামী দিনের বড় লড়াইয়ের প্রস্তুতি।”

    ওই এলাকায় সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের হয়ত সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে ওখানে। যাঁরা স্থানীয় নেতৃত্ব আছেন, তাঁরা মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।” তবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই আশাবাদী তিনি। তাঁর মতে, “মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে। সিপিএমকে ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলের হাত শক্ত করা।”

    তবে এই সমবায় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শাসক শিবিরের স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূলের হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষের বক্তব্য, “কেন এমন ফল হল, তা তদন্ত করে দেখা হবে। ইতিমধ্যেই দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। সমবায়ে কারা প্রার্থী হবেন, তা বর্তমান ব্লক সভাপতি ঠিক করেছিলেন। কোথাও সমন্বয়ের অভাব আছে কি না, তা নিয়ে দলে আলোচনা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এত উন্নয়নের কাজের পরেও মানুষ কেন মুখ ফিরিয়ে নিল, তা দেখতে হবে।” বস্তুত, অতীতে তৃণমূলের পাণ্ডুয়া ব্লকেরই সভাপতি ছিলেন সঞ্জয়। শাসকদলের বর্তমান ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম আনিসুল ইসলামের সঙ্গে একাধিক বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)