প্রাক-এসআইআর পর্বে ভোটার তালিকায় চলতি ‘ম্যাপিং’-এ রাজ্যের বেশিরভাগ জেলার অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। তবে দুই ২৪ পরগনার অগ্রগতি তুলনামূলক ভাবে ‘ভাল নয়’। তাই রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই জেলার উপরে বিশেষ নজর রেখেছে তারা।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর-পূর্ব বিধানসভার দুই আধিকারিককে ভোটার তালিকায় অসাধু হস্তক্ষেপের অভিযোগে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। সূত্রের খবর, একই অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কয়েকজন আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও।
প্রশাসনের খবর, ‘ম্যাপিং’-এর ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকার সঙ্গে ২০০২ সালের এসআইআর-তালিকা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। দুই তালিকায় কত জন ভোটারের নাম পাওয়া যাচ্ছে, বা বর্তমানের সঙ্গে আগের তালিকায় থাকা কত জন ভোটারের পারিবারিক সূত্র প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। ‘ম্যাপিং’-এ মিল থাকা ভোটারদের নতুন করে নথিপত্র, প্রমাণ বা যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে না। সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় কম মিল পাওয়া যাচ্ছে দুই ২৪ পরগনায়। সূত্রের দাবি, আগামী ১৫ অক্টোবর প্রক্রিয়া শেষে উত্তর ২৪ পরগনার ‘ম্যাপিং’-এ ৪৫%-এর কাছাকাছি মিল পাওয়া যেতে পারে। ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এই পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৫%। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৫০-৫৫ শতাংশের মতো মিল পাওয়া যেতে পারে। ৭ অক্টোবর পর্যন্ত তা প্রায় ৪৫% ছিল। এই দুই জেলার তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির মতো জেলায় দুই তালিকায় প্রায় ৭০% মিল পাওয়া গিয়েছিল।
জেলা-কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে অমিলের আওতায় থাকা ভোটারদের নিবিড় যাচাই করবে কমিশন। অন্য জেলাগুলিতে তুলনায় কম সংখ্যক ভোটার সেই যাচাইয়ের আওতায় থাকলেও, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অনেক সংখ্যক ভোটারই নিবিড় যাচাইয়ের মুখে পড়বেন। ওই দুই জেলায় ভোটারের সংখ্যাও বেশি (যথাক্রমে প্রায় ৮২ লক্ষ এবং ৭৭ লক্ষ)।
‘ম্যাপিং’-এর তথ্য বুথ লেভেল আধিকারিকদের (বিএলও) অ্যাপে দেওয়া হবে। তা দেখে তাঁরা যাচাই করবেন। একই সঙ্গে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) এবং এইআরও-দেরও চোখ-কান খোলা রাখতে বলা হয়েছে। গোটা পদ্ধতিতে সরাসরি নজর রাখবে দিল্লির নির্বাচন সদন। ইআরও-দের জন্য নির্ধারিত পোর্টালে (ইআরও-নেট) শুনানি বা নোটিস পাঠানোর সুবিধা যুক্ত করা যায় কি না, সে প্রস্তাবও খতিয়ে দেখছে কমিশন। গোটা পদ্ধতির অগ্রগতি রাজনৈতিক দলগুলিকে জানানো হবে। রাজনৈতিক দলগুলির মনোনীত বুথ লেভেল এজেন্টদের সঙ্গে নিয়েই সে কাজ হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “বৈঠকেই কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে, এক জন যোগ্য ভোটারের নামও বাদ যাবে না। কোনও অযোগ্য ভোটার তালিকাভুক্ত যাতে না হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদেরই।”