ভুয়ো আধার চক্রে আট জনকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। সেই তালিকায় আছেন এক ডাককর্মীও। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃত ডাককর্মীর লগ ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই আধার জালিয়াতি হয়েছিল। গত এক বছরে ওই আইডি থেকে কতগুলি আধার তৈরি করা হয়েছিল, ডাক বিভাগের কাছে সেই তথ্য চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু মাস খানেক কেটে গেলেও সেই তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ ডাক বিভাগের কাছ থেকে মেলেনি বলে এসটিএফ সূত্রের দাবি। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে অবশ্য ভুয়ো আধার মামলা চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। তাতে ধৃত অস্থায়ী ডাককর্মী বিধান মুর্মু-সহ আট জনের নাম রয়েছে। সেই তালিকায় আছেন এক বাংলাদেশিও। তবে চার্জশিটে এই চক্রের দুই চাঁইয়ের নাম আছে যদিও তাঁরা এখনও খাতায়-কলমে ‘ফেরার’।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরের কানকি ডাকঘরের অস্থায়ী কর্মী বিধানের লগ ইন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আধার কার্ড তৈরি হয়েছে। কিন্তু কতগুলি ভুয়ো আধার তৈরি করা হয়েছে, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নন তদন্তকারীরা। ডাক বিভাগের কাছ থেকে তথ্য এলে সেই তালিকা খতিয়ে দেখার পরে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব বলেও গোয়েন্দাদের দাবি। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের কাছ থেকে নথিপত্র, বায়োমেট্রিক যন্ত্র ছাড়াও, সিলিকন মোল্ড (ছাঁচ) উদ্ধার হয়েছিল। ওই ছাঁচ ব্যবহার করেই আঙুলের ছাপজাল করা হত।
কোর্টের খবর, জমা পড়া চার্জশিটে বিধান ছাড়াও এই চক্রের চাঁই গিরিধারী রায়ের নামও আছে। তাঁর মা-ও ডাককর্মী এবং আধার সংশোধনের কাজে যুক্ত। আধার করা নিয়েই বিধানের সঙ্গে গিরিধারীর আলাপ হয়েছিল। আধার কার্ড করার জন্য ডাককর্মীর লগ ইন আইডি ছাড়াও আঙুলের ছাপ ও ম্যাক আইডি প্রয়োজন হয়। গিরিধারী বিধানের আইডি ও পাসওয়ার্ড নেওয়ার পাশাপাশি, সিলিকনের ছাঁচে আঙুলের ছাপ তুলে নিয়েছিল। ম্যাক আইডি-ও জাল (স্পুফিং) করা হয়। সেই তথ্য এসটিএফ চার্জশিটে উল্লেখ করেছে। তদন্তকারীরা চার্জশিটে এ-ও জানান, এই ভুয়ো আধার চক্রের পিছনে একটি বড় দল আছে। তাদের কার্যকলাপ দেশের অন্যান্য রাজ্যেও আছে। গিরিধারী ছিল এই চক্রের অন্যতম সমন্বয়কারী। পুলিশের একাংশের দাবি, ফেরার দুই চাঁইকে গ্রেফতার এবং ডাক বিভাগের তথ্য পেলে এই চক্রের শিকড়ে পৌঁছনো সম্ভব হবে।