জোকা মেট্রোর সুড়ঙ্গ কাটতে কাজ শুরু করল টিবিএম ‘দিব্যা’
আনন্দবাজার | ১২ অক্টোবর ২০২৫
গত জুলাইয়ে খিদিরপুরের সেন্ট টমাস স্কুলের পরিসর থেকে পার্ক স্ট্রিট অভিমুখে সুড়ঙ্গ খোঁড়া শুরু করেছিল টানেল বোরিং মেশিন দুর্গা। ওই যন্ত্র জোকা মেট্রোর এসপ্লানেডমুখী ট্রেনের সুড়ঙ্গ খনন করছে। গত ১০ জুলাই ওই যন্ত্রের কাজ শুরু হওয়ার তিন মাসের মাথায় ওই একই পরিসর থেকে শনিবার অন্য সুড়ঙ্গটির খনন প্রক্রিয়ার সূচনা করলেন কলকাতা মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার শুভ্রাংশু মিশ্র। নতুন সুড়ঙ্গ খননের জন্য নির্দিষ্ট টানেল বোরিং মেশিনের নাম রাখা হয়েছে দিব্যা।
ওই দু’টি টিবিএম ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হয়ে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খনন করবে। আগামী বছরের মে-জুন নাগাদ ১৭২৩ মিটার পথে সুড়ঙ্গ খনন করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে পৌঁছবে দুর্গা। তার কয়েক মাসের মধ্যে দিব্যা ওই স্টেশনে পৌঁছবে। এর পর দু’টি যন্ত্রের এক দফা রক্ষণাবেক্ষণের পরে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত ৯১৪ মিটার পথে সুড়ঙ্গ খনন চলবে। ওই স্টেশন থেকে এসপ্লানেড পর্যন্ত শেষ ২০০ মিটার অংশে কাট অ্যান্ড কভার পদ্ধতিতে সুড়ঙ্গ নির্মাণ হওয়ার কথা। আগামী বছরের ডিসেম্বরে দুর্গা পার্ক স্ট্রিটে এবং ২০২৭ সালের মার্চ মাসে দিব্যা পার্ক স্ট্রিটে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছেন কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এস এস কান্নান।
দুর্গা এ পর্যন্ত প্রায় দেড়শো মিটার পথে সুড়ঙ্গ খনন করেছে। ওই টিবিএম এখন আদিগঙ্গার তীর পর্যন্ত পৌঁছেছে। খিদিরপুরের সেন্ট টমাস স্কুলে লম্বায় ৩৭ মিটার, চওড়ায় ২২ মিটার এবং ১৭ মিটার গভীর একটি চৌবাচ্চার মতো গর্ত খনন করা হয়েছে। এ জন্য ডায়মন্ড হারবার রোডের যান চলাচল ব্যাহত না করে বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। প্রায় ৯৫ মিটার লম্বা ৬০০ টন ওজনের টানেল বোরিং মেশিন দু’টির একেবারে সামনের মূল অংশকে ব্যবহার করে ধীর গতিতে সুড়ঙ্গ খনন শুরু করা হচ্ছে। তার পরে ধাপে ধাপে যন্ত্র মাটি কেটে সামনের দিকে এগোলে পিছনের অংশগুলি পর পর যোগ করা হচ্ছে। ওই পদ্ধতি অবলম্বন করে দুর্গা এ পর্যন্ত ১৫০ মিটার এগিয়েছে। ওই যন্ত্র পুরো দমে কাজ শুরু করতে সম্পূর্ণ তৈরি।
একই ভাবে মাত্র ওই চৌবাচ্চা ব্যবহার করে দিব্যাকে দিয়ে কাজ শুরু করানো হচ্ছে। ওই টিবিএম এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে তারও বিভিন্ন অংশ জুড়ে পূর্ণাঙ্গ চেহারা দেওয়া হবে। ওই যন্ত্র বাইরের দিকে ৬.৬৩ মিটার প্রশস্ত সুড়ঙ্গ খনন করবে। ভিতরের দেওয়াল ৫.৮ মিটার মতো প্রশস্ত হবে। মেট্রো সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বার সুড়ঙ্গ খননের সময়ে কলকাতার নরম মাটির কথা মাথায় রেখে বৌবাজারের মতো বিপত্তি এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জলের স্পর্শে ফুলে যায়, এমন রবারের সিল ছাড়াও বিশেষ টেল স্ক্রিন গ্রিজ ব্যবহার হচ্ছে।