চেয়ারে বসে যুবকের হৃদযন্ত্র বিকল, মুহূর্তের মধ্যে সব শেষ! মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে ফিরেও তাকালেন না সহকর্মীরা
আজকাল | ১২ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৪৫ বছরের যুবক। আচমকা বুকে ব্যথা। তৎক্ষণাৎ হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল তাঁর। এদিকে তাঁর পাশেই বসেছিলেন সহকর্মীরা ও মালিক। মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন যে যাঁর মতো। যুবকের এহেন পরিস্থিতি দেখেও সাহায্যের জন্য ছুটে এলেন না কেউ। ভয়াবহ দৃশ্য ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের মারওয়া জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুসনের এলাকার তিরুপতি ট্রেডার্সের ৪৫ বছরের এক কর্মী আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কোম্পানির ভিতরে এক চেয়ারেই বসেছিলেন তিনি। সেই সময়েই আচমকা তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সেই যুবকের ঠিক পাশেই বসেছিলেন তাঁর সহকর্মী। তিনি সেই সময় মোবাইল ফোনেই ব্যস্ত ছিলেন। সহকর্মী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যে মারা যাচ্ছেন, সেদিকে চোখ তুলেও তাকাননি।
মৃত যুবকের নাম, রফিক। তিনি ওই দোকানেই কাজ করেন দীর্ঘদিন। চেয়ারে বসেছিলেন সেই সময়। তখনই আচমকা বুকে ব্যথা অনুভব করেন। চেয়ারে বসেই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ছয় মিনিট ধরে চেয়ারে বসাকালীন ছটফট করতে দেখা গেছে তাঁকে। বুকে যন্ত্রণার সময় শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল তাঁর। আশেপাশেই ছিলেন সহকর্মীরা। অথচ কেউই খেয়াল করে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, যে সময় বুকের যন্ত্রণায় রফিক ছটফট করছিলেন, তখন মোবাইল ফোনে ব্যস্ত ছিলেন তাঁর পাশেই বসে থাকা এক সহকর্মী। মোবাইল ফোন ঘাঁটার সময় এতটাই মগ্ন ছিলেন, রফিকের অসুস্থতাও টের পাননি। একবার রফিককে দেখে আবারও ফোন ঘাঁটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। খানিকক্ষণ পর দেখেন, রফিক অচৈতন্য অবস্থায় চেয়ারে পড়ে আছেন। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, আর শেষরক্ষা হয়নি। ৪৫ বছরের যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
পরিবারের অভিযোগ, প্রয়োজনের বেশি ভার বহন করার জন্য রফিককে জোরাজুরি করতেন মালিক। অতিরিক্ত পরিশ্রমের জেরেই শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত ছিলেন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সময়েও তাঁকে সাহায্যের জন্য কেউ ছুটে আসেননি। বরং বাকি কর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দিচ্ছিলেন মালিক। স্রেফ মালিকের গাফিলতিতেই যুবকের তরতাজা প্রাণ খোয়া গেছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। নিজের বিয়েতে আনন্দে আত্মহারা ছিলেন। বিয়ের আসরে পৌঁছেও নাচ থামছিল না। পরক্ষণেই ঘটল বিপত্তি। ঘোড়ার পিঠে চড়ে নাচতে নাচতে লুটিয়ে পড়লেন পাত্র। হাসপাতালে নিয়ে যেতেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করলেন চিকিৎসকরা। বিয়ের আসরে পাত্রের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের শেওপুর জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম, প্রদীপ জাট। তিনি কংগ্রেসের প্রাক্তন যুবনেতা ছিলেন। ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘোড়ায় চড়ে বিয়ের আসরে ঢোকেন তিনি। নাচতে নাচতে আচমকাই ঘোড়ার সামনে ঝুঁকে পড়েন। সকলেই নাচে মত্ত ছিলেন। কয়েকজন আবার পাত্রীকে ঘিরেছিলেন। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে কারও চোখে পড়েনি।
পাত্রকে কিছুক্ষণ লুটিয়ে থাকতে দেখে হঠাৎ একজন ছুটে এসে তাঁকে ঘোড়া থেকে নামানোর চেষ্টা করেন। নাচ থামিয়ে বাকিরাও ছুটে আসেন তখন। দ্রুত প্রদীপকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে ২৬ বছর বয়সি তরুণের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মর্মান্তিক ঘটনার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা গেছে, বরের পোশাকে খোশ মেজাজেই বিয়ের আসরে পৌঁছন প্রদীপ। শারীরিক অস্বস্তির ছাপটুকু বোঝা যায়নি। পাত্রপক্ষ নাচ করছিল তাঁকে ঘিরেই। তাঁর শারীরিক অসুস্থতা ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।