• সাপের কামড় নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল এই রাজ্য, কী সুবিধা হবে সকলের...
    আজকাল | ১২ অক্টোবর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেরালায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমবর্ধমান হওয়ায় রাজ্য সরকার এটিকে জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ রোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের সাম্প্রতিক নির্দেশ অনুসারে, এখন থেকে সাপের কামড়ের সমস্ত ঘটনা ও মৃত্যুর তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে নোটিফাই করতে হবে। অর্থাৎ, যে কোনো ব্যক্তি, স্বাস্থ্যকর্মী বা সরকারি কর্মকর্তা যদি এমন কোনো ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন, তা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

    এই সিদ্ধান্তটি এসেছে কেরালা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নীতিন জমদার ও বিচারপতি শোভা অন্নম্মা ইপেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের এক নির্দেশের পর। আদালত স্বাস্থ্য দপ্তরকে সাপের কামড়কে নোটিফায়েবল রোগ হিসেবে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে রাজ্যে এই সংক্রান্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা, প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ এবং তথ্য সংগ্রহ আরও কার্যকরভাবে করা যায়।

    স্বাস্থ্য দপ্তরের এক বৈঠকে বনদপ্তর জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে “Snake Awareness, Rescue and Protection” প্রোগ্রাম গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা, সাপ ধরার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দল গঠন করা, এবং সাপের কামড়ে আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

    সভায় আরও আলোচনায় উঠে এসেছে যে বর্তমানে রাজ্যে ব্যবহৃত অ্যান্টি-স্নেক ভেনম বেশ কার্যকর, তবে কিছু এলাকায় বিশেষ প্রজাতির সাপের বিষের বিরুদ্ধে এটি পুরোপুরি কার্যকর নয়। তাই ভবিষ্যতে আরও উন্নত ও বহুমুখী প্রতিষেধক সংগ্রহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

    কেরালায় সাপের কামড়ের ঘটনা বর্ষাকাল ও ধান কাটার সিজনে বেড়ে যায়। কৃষিজীবী, বনাঞ্চলের বাসিন্দা ও গ্রামীণ এলাকার মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ৪,০০০–৫,০০০ মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে শতাধিক মৃত্যু ঘটে। বিশেষত গোখরা, রাসেল ভাইপার ও বান্দা প্রজাতির সাপের কামড় সবচেয়ে বিপজ্জনক।

    রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আলাদা সাপ কামড় সেল স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও নার্সদের মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হবে। প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-ভেনম মজুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, সাপের কামড় কেবল একটি ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা নয়, এটি এখন এক বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। সঠিক চিকিৎসা, দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া মৃত্যুহার কমানো সম্ভব নয়।

    স্বাস্থ্য দফতরের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে রাজ্যে সাপের কামড়জনিত মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনার পথে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন দেখা যাক, প্রশাসনিক পদক্ষেপ ও চিকিৎসা পরিকাঠামোর উন্নতি এই প্রাণঘাতী সমস্যা মোকাবিলায় কতটা কার্যকর হয়।
  • Link to this news (আজকাল)