বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে পচা পচা গন্ধ, দরজা ভেঙে ঢুকতেই আঁতকে উঠল পুলিশ, ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৫টি নিথর দেহ! ...
আজকাল | ১২ অক্টোবর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। সদস্যদের বেশ কয়েকদিন ধরেই দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। আচমকা একদিন পচা পচা গন্ধ বের হয় ওই ফ্ল্যাট থেকেই। সন্দেহের বশে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই হতবাক পুলিশ। বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার গোটা পরিবারের সদস্যদের নিথর দেহ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সিকার জেলায় অনিরুধ রেসিডেন্সিতে একটি ফ্ল্যাট থেকে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃতদেহ করা হয়েছে। সকলের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক সুরেশ শর্মা জানিয়েছেন, স্থানীয়রাই বিষয়টি প্রথমে খেয়াল করেন। গত কয়েকদিন ধরেই ওই ফ্ল্যাটের দরজা, জানলা বন্ধ ছিল। কেউই যাতায়াত করেননি। কোনও সদস্যকেই কেউ দেখতে পাননি। ফ্ল্যাটটি টানা কয়েকদিন বন্ধ দেখেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীরা। পুলিশে খবর দিতেই তারা ছুটে আসে এলাকায়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হয় ওই ফ্ল্যাট থেকে। এরপর পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে সকলে ভিতরে প্রবেশ করে। সেই ঘরগুলি থেকে পাঁচজনের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক টিম ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে ঝামেলার পর এক মহিলা তাঁর চার সন্তানকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটেই থাকতেন। ৩৫ বছরের যুবতীর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। সবচেয়ে ছোট ছেলের বয়স তিন বছর। প্রত্যেকেরই শরীরে বিষ পাওয়া গেছে। স্বামীর সঙ্গে কী নিয়ে ঝামেলা চলছিল তা এখনও জানা যায়নি। যুবতীর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। কী কারণে চার সন্তানকে নিয়ে চরম পদক্ষেপ করলেন যুবতী, তাও খতিয়ে দেখছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল ভিন রাজ্যে। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃতদেহ। এক দম্পতি ও তাদের তিন খুদে সন্তানের নিথর দেহকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। দিল্লির সেই বুরারিকাণ্ডের ছায়া এবার খাস নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে। গুজরাটে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে তদন্ত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের আহমেদাবাদের বাগোদারায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন বিপুল ভাগেলা ও সোনাল ভাগেলা এবং তাঁদের ১১ ও পাঁচ বছরের দুই কন্যাসন্তান ও আট বছরের এক পুত্রসন্তান। রবিবার সকালে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিন সকালে প্রতিবেশীরাই পুলিশে প্রথম খবর দেন। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী, অ্যাম্বুল্যান্স। দুটি ঘর থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা পাঁচজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুই কন্যাসন্তান ও এক পুত্রসন্তানকে খুন করে দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছে।
এদিকে মৃত দম্পতির পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, তাঁরা আদতে ঢোলকার বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে বাগোদারায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বিপুল পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন। পরিবারে তিনি একাই উপার্জন করতেন। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতেন। আর্থিক অনটনের কারণেই হয়তো চরম পদক্ষেপ করেছেন।
পরিবারের তরফে আরও জানা গেছে, কয়েক মাস আগে বিপুল ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনেছিলেন। সেটির ধাঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। একদিকে সংসারের চাপ, অন্যদিকে ঋণের বোঝা। সবমিলিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তিন সন্তানকে বড় করে তোলার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না তাঁর। ঋণের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পরিবারের।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তবেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঋণ শোধ করার জন্য কেউ চাপ সৃষ্টি করতেন কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মহত্যায় কেউ বা কারা প্ররোচনা দিয়েছিল কিনা, তাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত জারি রয়েছে।