ভারত-নেপাল সীমান্তের এই এলাকায় ৫ অক্টোবর একটি হাতি শাবক মেচি নদীর প্রবল স্রোতে ভেসে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে। পরে সেটিকে বন দপ্তরের তরফে জলদাপাড়ার পিলখানায় পাঠানো হয়। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ওই ঘটনার পর থেকে শাবকের খোঁজে প্রায় প্রতিদিন গ্রামগুলোতে হাতি ঢুকছে। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরে নকশালবাড়ি এলাকায় হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে আটজনের। ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। হড়পা বানের পর পরিস্থিতি পালটেছে। দুলাল জোতের বাসিন্দা রতন দাস জানান, এখন সন্ধ্যা হলে হাতি জঙ্গল থেকে গ্রামে ঢুকছে। কখনও একটি। আবার কখনও দল থাকছে। আতঙ্কে ঘরের আলো নিভিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। এর আগে নকশালবাড়ি ব্লকের ভারত-নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন কলাবাড়ি জঙ্গল থেকে দুটি হাতি বেরিয়ে কলাবাড়ি মোড় এলাকায় যায়। ওই বুনোদের সামাল দিতে কালঘাম ছুটছে বনকর্মীদের। নকশালবাড়ির মিরজাংলা এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায়দিন জঙ্গল থেকে হাতি বের হয়ে লোকালয়ে ঢুকছে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরভর একশোটি হাতি পাহাড়ের পাদদেশে তরাই এলাকা অর্থাৎ শিলিগুড়ি মহকুমার মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি এবং খড়িবাড়ি ব্লকের টুকরা জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। ভারত-নেপাল সীমান্তের মেচি নদী থেকে বাংলা-অসম সীমান্তের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সংকোশ নদী পর্যন্ত হাতি করিডরের পুরো অংশ ধরে বুনোদের যাতায়াত। ধান ও ভুট্টার সময় হাতির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়। এবার হড়পা বানে জঙ্গল এলাকা বিধ্বস্ত হতে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে বুনো হাতির যাতায়াত অনেক বেড়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, “হড়পা বানে মানুষ, বন্যপ্রাণী সবাই বিপর্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের বলা হয়েছে কোথাও বন্যপ্রাণী দেখা গেলে বিরক্ত না করে যেন বনদপ্তরে খবর দেয়।”