মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে কাশির সিরাপে ক্ষতিকর উপাদানের প্রভাবে একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনার পর সতর্ক পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবন জরুরি নির্দেশিকা জারি করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাংলার বাজারে কোনওভাবেই নিম্নমানের বা ঝুঁকিপূর্ণ কাফ সিরাপ চলবে না। রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতার পথ অনুসরণ করে এবার কঠোর নজরদারিতে নামল রাজ্য প্রশাসন।
স্বাস্থ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বাজারে প্রচলিত প্রায় দেড়শোর বেশি কাফ সিরাপের নমুনা ইতিমধ্যেই ল্যাবে পাঠানো হয়েছে গুণমান পরীক্ষার জন্য। সব সরকারি হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে বিশেষ সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেসব কাশির সিরাপ বর্তমানে হাসপাতালে মজুত রয়েছে, সেগুলির সেলফ লাইফ ও রাসায়নিক গুণাগুণ জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখতে হবে।
সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সিরাপ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালগুলিতে। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ অনুযায়ী প্রোপিলিন গ্লাইকোল, গ্লিসারিন, সরবিটল সহ যাবতীয় কাঁচামাল শুধুমাত্র সরকার অনুমোদিত সরবরাহকারীর কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে ইথিলিন গ্লাইকোল ও ডাইইথিলিন গ্লাইকোল-এর মতো মারাত্মক বিষাক্ত উপাদানের বিষয়ে, যা অনেক সময় অসতর্কতায় বা ভেজালে মিশে যায় সিরাপের মধ্যে। এটি শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।
প্রস্তুতকারক সংস্থাদের পাশাপাশি খুচরো বিক্রেতাদেরও কড়া বার্তা দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এসএমআইএস সিস্টেমে ওষুধ আপলোডের আগে প্রত্যেকটি সিরাপের জন্য এনএবিএল স্বীকৃত ল্যাব থেকে স্ট্যাটুটারি স্যাম্পল রিপোর্ট অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে যে কোনও গাফিলতি বা তথ্য গোপন করলে প্রস্তুতকারক ও বিক্রেতা উভয়কেই আইনি জবাবদিহির মুখে পড়তে হবে। স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা স্পষ্ট জানিয়েছেন, শিশুদের জন্য ব্যবহৃত ওষুধে কোনও আপস বরদাস্ত করা হবে না। বাজারে যা রয়েছে, সবই পরীক্ষা হবে। প্রয়োজনে সংস্থা ও বিক্রেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।