• খামখেয়ালি আবহাওয়ায় কাশ্মীরে বিপন্ন শরৎ, ব্যাপক প্রভাব পোশাকের ব্যবসায়
    বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ফিরদৌস হাসান, শ্রীনগর: বিশ্বজুড়ে উষ্ণায়ন। আর তার প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরের ঋতু পরিবর্তনেও। গত কয়েক বছর ধরেই উপত্যকায় কার্যত উধাও শরত্কাল। গ্রীষ্ম শেষ হতে না হতেই জাঁকিয়ে বসছে কনকনে ঠান্ডার মরশুম। আর শরত্ মুখ ফিরিয়ে থাকার প্রভাব পড়েছে কাশ্মীরবাসীর দৈনন্দিন জীবনেও। উপত্যকার বাসিন্দাদের অনেকেই শীত পোশাকের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু আবহাওয়ার বদলে কার্যত বন্ধ হতে বসেছে হালকা ঠান্ডা পোশাকের ব্যবসা। স্লিভলেস সোয়েটার বা শ্রাগের বদলে ব্যবসায়ীরাও এখন শুধু প্রবল ঠান্ডায় ব্যবহৃত জ্যাকেট বা সোয়েটার বিক্রির দিকে ঝুঁকছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অক্টোবর মাস শুরু হতে না হতেই কাঁপুনি ধরাচ্ছে শীত। আর তখন শুধু ভারী পোশাকেই চাহিদাই বাড়ছে। পহেলগাঁও ও কুপওয়ারার মতো উঁচু জায়গাগুলিতে তো ইতিমধ্যেই ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘ফিরান’ ব্যবহার শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। 

    শ্রীনগরে পোশাকের দোকানের মালিক বশির আহমেদ বললেন, ‘আগে স্থানীয়রা শীতের শুরুতে এক-দু’মাস হালকা সোয়েটার, হাফ জ্যাকেট বা শ্রাগ ব্যবহার করতেন। এখন সে সব অতীত। আমরা এখন সুতির জামা থেকে সোজা ভারী জ্যাকেট পরতে শুরু করছি। আমি তো এই বছর দোকানে হালকা পোশাকের স্টক বেরই করিনি।’ বশির আরও জানালেন, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা এমনিতেই কমেছে। তাই এখন মাত্র এক-দু’সপ্তাহের জন্য আলাদা করে জামাকাপড় কিনতে চাইছে না।’ একই বক্তব্য অপর ব্যবসায়ী ফিরদৌস আহমেদেরও। তিনি জানালেন, আগে সেপ্টেম্বরের শেষে ক্রেতারা হালকা উলের পোশাক, সোয়েটশার্ট কিনতে আসতেন। এখন সে সব দেখালে তাঁরা হাসেন। শুধু শ্রীনগর নয়, দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ থেকে উত্তর কাশ্মীরে বারামুলা-সর্বত্রই ছবিটা এক। বারামুলায় অক্টোবরের শুরুতেই বরফ পড়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

    শ্রীনগর আবহাওয়া দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত দু’দশক ধরেই আবহাওয়ার এই বদল চলছে। তাপমাত্রার অস্থিরতার জন্যই শরত্ ও বসন্ত ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সোনম লোটাসের বক্তব্য, শরত্ ও বসন্তে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা আরও বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। দিনে উষ্ণতা কিছুটা বেশি থাকলেও, রাতে ঠান্ডা বাড়ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)