রিভিউ বৈঠক সেরেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মমতা, দুর্যোগে প্রাণ বাঁচানো ৮ ‘যোদ্ধা’কে পুরস্কার
বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
রবীন রায় আলিপুরদুয়ার
দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে পাঁচদিনের জন্য ফের উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় নেমেই তিনি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের নীলপাড়া রেঞ্জের কমিউনিটি হলে রিভিউ বৈঠক করেন। জেলা প্রশাসন সহ স্বাস্থ্য, বন, পঞ্চায়েত, কৃষি ও জনস্বাস্থ্য কারিগরির মতো ছ’টি দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে নিয়ে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের কাজ পর্যালোচনা করেন তিনি। কোথায় কোথায় রাস্তা, সেতু, কালভার্ট, চা বাগান, বনবস্তি ও বনাঞ্চলের কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, পুনর্গঠনের কাজ কতদূর এগোলো—সবটাই বিস্তারিত খোঁজখবর করেন। দুর্যোগের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ও বন্যপ্রাণ বাঁচিয়েছেন, জেলার এমন আটজন যোদ্ধাকে মুখ্যমন্ত্রী এদিন রিভিউ বৈঠকেই পুরস্কৃত করেন। পুরস্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার, বিপর্যয় মোকাবিলা টিমের কর্মী থেকে শুরু করে বনরক্ষী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের লোকজন। সাম্প্রতিক দুর্যোগে আলিপুরদুয়ারে কোনও প্রাণহানি না হওয়ায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক সেরে মমতা চলে যান সুভাষিনী চা বাগানে তোর্সার ভাঙা বাঁধের কাছে। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, ডিজি রাজীব কুমার সহ বিধায়করা। সেখানে বাঁধ মেরামতির কাজ পরিদর্শন করেন তিনি। এরপর পাশেই বনদপ্তরের মালঙ্গি বনবাংলোয় পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমিক মহল্লায় নিজেই ত্রাণ বিলি করেন।
সেই সময় বাগানের কয়েকজন মহিলা শ্রমিক মাথায় কাঠ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছে জানতে চান, কী হবে এই কাঠ দিয়ে? শ্রাবন্তী মিন্জ নামে এক শ্রমিক মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের গ্যাস সিলিন্ডার কেনার টাকা নেই। তাই এসব দিয়েই রান্না করি।’ একথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ায় কেন্দ্র। এখানে আমার তো কিছু করার নেই। কিন্তু সবসময় তোমাদের পাশে আছি।’ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর মুখে একথা শুনে দৃশ্যতই আপ্লুত শ্রাবন্তী সহ অন্যান্যরা তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানান। আজ, সোমবার নাগরাকাটার বামনডাঙার বিধ্বস্ত তন্ডু চা বাগানে যাবেন মমতা। বামনডাঙার মডেল ভিলেজ, গোঠ ও বিচ লাইনে নদীর জলের তোড়ে প্রাণ গিয়েছে ১১ জনের। এখনও বিদ্যুৎ আসেনি মডেল ভিলেজে, যেখানে ৫৭১টি পরিবারের বসবাস। অধিকাংশ পরিবারের ঠাঁই হয়েছে বাগানের ফ্যাক্টরির অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে। মঙ্গলবার মিরিক যাওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।