• ত্রাণ বিলি করতে সুভাষিণী চা বাগানে মুখ্যমন্ত্রী
    বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: দুর্যোগে তোর্সা নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে গিয়েছিল হাসিমারার সুভাষিণী চা বাগানে। ভুটানের ডলোমাইট মিশ্রিত পলিতে চাপা পড়ে নষ্ট হয়েছে বাগানের হেক্টরের পর হেক্টর চা গাছ। রবিবার বিকেলে সেই সুভাষিণী চা বাগানে বিধ্বস্ত তোর্সা বাঁধের উপর হেঁটে ক্ষয়ক্ষতি দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে নিজের হাতে বাগানের নদী লাইনের দুর্গত শ্রমিকদের ত্রাণ বিলি করেন তিনি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিক মহল্লায় এসে ত্রাণ বিলি করবেন, ভাবতেও পারেননি চা শ্রমিকরা। স্বভাবতই মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ত্রাণ নেওয়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁরা। 

    এদিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী হাসিমারায় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের নীলপাড়া রেঞ্জের কমিউনিটি হলে জেলার ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্গঠনের কাজ নিয়ে রিভিউ বৈঠক করেন। সংক্ষিপ্ত সেই বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী সোজা পৌঁছন সুভাষিণী বাগানের তোর্সা নদীর ভাঙা বাঁধের কাছে। সেখানে আগে থেকেই বাগানের কয়েকশো শ্রমিক দাঁড়িয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বাঁধ দিয়ে হেঁটে আসতে দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি স্নিগ্ধা শৈব। ছিলেন জেলাশাসক আর বিমলা ও পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী। 

    মুখ্যমন্ত্রী তোর্সার ক্ষতবিক্ষত বাঁধ খতিয়ে দেখে জেলা প্রশাসনের কাছে সেটির মেরামতের কাজ কেমন চলছে তারও খোঁজখবর নেন। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বাঁধের পাশে সুভাষিণী বাগানের শ্রমিক মহল্লা নদী লাইনে আসেন এবং শ্রমিকদের ভিড়ে মিশে যান। শ্রমিকদের হাতে খাদ্যসামগ্রী, জামাকাপড় তুলে দেন। শিশুদের চকোলেট, জামা-প্যান্ট দেন। 

    বাগানে হাঁটার সময় কয়েকজন মহিলা শ্রমিক মাথায় জ্বালানি কাঠ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এই দৃশ্য মুখ্যমন্ত্রীর নজর এড়ায়নি। তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করেন কী হবে এই কাঠ দিয়ে। তখন শ্রাবন্তী মি‌ন্‌জ নামে এক শ্রমিক এগিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, আমাদের তো গ্যাস সিলিন্ডার কেনার টাকা নেই। তাই এসব দিয়েই রান্না করি। একথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ায় কেন্দ্র। এখানে আমার তো কিছু করার নেই। কিন্তু আমি তোমাদের পাশে আছি। একথা শুনে উচ্ছ্বসিত শ্রাবন্তী সহ অন্য মহিলারা বলেন, আপনি যেভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তারজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। 

    তোর্সার জল ঢুকে সুভাষিণী চা বাগানের নদী লাইনে ২৫টি শ্রমিক আবাস নষ্ট হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী দুর্গত শ্রমিকদের কাছে জানতে চান, তাঁরা এখন কেমন আছেন? কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না। শ্রমিকরা সমস্বরে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান তাঁরা এখন ভালো আছেন। শ্রমিক হীরামণি কুজুর, রাজেশ মিন্‌জ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এলাকায় এসে নিজে হাতে আমাদের ত্রাণ দেবেন ভাবতেও পারিনি। 

    সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর নাগরাকাটায় যাওয়ার কথা। 

     প্রশাসনিক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন অরূপ বিশ্বাস, উদয়ন গুহ, রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়ও। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)