সংবাদদাতা, দিনহাটা: দিনহাটা শহরের একাধিক ওয়ার্ডে পানীয় জলের অভাবে চরম সংকটে পড়েছেন সাধারণ নাগরিকরা। কারও বাড়িতে কল থেকে সুতোর মতো জল পড়ছে, আবার কারও এলাকায় দিনের বেশিরভাগ সময়ই কলে জল থাকছে না। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সমস্যায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমছে। অভিযোগ উঠেছে, পুরসভার তরফে সমস্যা নিরসনে কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে, পুরসভার দাবি, অমৃত-২ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হলে শহরের প্রতিটি বাড়িতে নিরবচ্ছিন্ন জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
মদনমোহন বাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের বাড়ির জলের লাইনে ফোর্স না থাকায় কল থেকে সুতোর মতো জল পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে প্রতিদিন ৫০০ মিটার দূরে দিনহাটা গার্লস স্কুল সংলগ্ন ট্যাপ থেকে জল সংগ্রহ করতে হয়। সকাল ও বিকেল দুই সময়ে জল সরবরাহ করা হলেও জলে পর্যাপ্ত ফোর্স না থাকায় নাগরিকদের তীব্র ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সকালবেলা জল সংগ্রহ করতে দীর্ঘলাইন পড়ে গার্লস স্কুলের সামনে। অনেকে টোটো ভাড়া করে জলের জার ভরে নিয়ে আসছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজু রায় বলেন, বহুদিন ধরেই আমাদের বাড়ির কল থেকে ঠিকঠাক জল পড়ছে না। তাই প্রতিদিন সকালবেলা গার্লস স্কুলের পাশে ট্যাপে গিয়ে জল আনছি। সেখানে লম্বা লাইন পড়ে যায়। আবার অনেক সময় জলের পাইপ ফেটে নোংরা ঢুকে যায়। তখন ঘোলা জল আসে। সেই জল খাওয়ারও উপযুক্ত থাকে না।
এ বিষয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে পুরসভার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা কমিটির সদস্য শুভ্রালোক দাস বলেন, বাম আমলে দিনহাটা পুরসভা তিন বেলা জল সরবরাহ করত। এখন তা কমে দু’বেলায় দাঁড়িয়েছে। বহু ওয়ার্ডে নাগরিকরা জল পাচ্ছেন না। পুরসভা যদি দ্রুত সমস্যার স্থায়ী সমাধান না করে, তাহলে আমরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব।
অন্যদিকে, পুরসভার পক্ষ থেকে অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দিনহাটা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাবির সাহা চৌধুরী বলেন, কোনও নাগরিক সমস্যা জানালে আমরা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করি। ইতিমধ্যেই বহু এলাকায় জল সরবরাহের সমস্যা অনেকটাই মিটে গিয়েছে। অমৃত-২ প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই দিনহাটায় পানীয় জলের কোনও অভাব থাকবে না। বেহাল কল। - নিজস্ব চিত্র।