পাহাড়-সমতলের দুর্যোগ বিধ্বস্তদের ত্রাণ দেবে বিপ্লবীদের ‘ডেরা’ আনন্দময়ী কালী মন্দির
বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: দশভুজার ভোগ বিক্রি থেকে আয় ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। একই ভাবে বিক্রি করা হবে কালীপুজোর ভোগ। দু’টি পুজোর সেই আয় নিয়ে পাহাড় ও সমতলের দুর্যোগ বিধ্বস্ত গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়াবে শিলিগুড়ির ‘বিপ্লবীদের কালী মন্দির’ আনন্দময়ী কালীবাড়ি। রবিবার মন্দির কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা কালীপুজোর পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করবে।
আনন্দময়ী কালীবাড়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর বিশ্বাস বলেন, এদিন বন্যা বিধ্বস্ত পোড়াঝাড়ে ত্রাণ বিলি করার কথা ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে ত্রাণ মেলায় সেখানকার বাসিন্দারা কয়েকদিন পর সহযোগিতা করার আর্জি জানান। তাই কালীপুজোর পর পাহাড় ও সমতলে দুর্যোগ বিধ্বস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে তাঁদের চাহিদামতো ত্রাণ বিলি করা হবে। এক্ষেত্রে ভোগ থেকে মেলা অনুদানের অর্থ ব্যবহার করা হবে। শতবর্ষ প্রাচীন আনন্দময়ী কালীবাড়িতেই ছিল বিপ্লবীদের ডেরা। চারণ কবি মুকুন্দ দাসের স্মৃতি বিজড়িত এই মন্দিরের দুর্গা ও কালীপুজোর ভোগের কদর যথেষ্ট। মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার দুর্গাপুজোয় অর্থের বিনিময়ে বিলি করা হয়েছে ১১ হাজার ৮৮০প্লেট ভোগ। যারমধ্যে অষ্টমী পুজোর ভোগের প্লেটের সংখ্যাই ছিল ৫ হাজার ৫০০ প্লেট। প্রতি প্লেটের দাম ছিল ১০০ টাকা করে। তাতে পোলাও, দু’রকম সবজি, ছোলার ডাল ও পায়েস ছিল। এই ভোগ বিক্রি করে মিলেছে প্রায় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
সপ্তমীতে ২৫০০ ফয়েল প্যাকেটে ও নবমীতে ৩৮০০ ফয়েল প্যাকেটে ভোগ বিক্রি করা হয়। প্রতি প্যাকেটের দাম ছিল ৫০ টাকা। তাতে ছিল খিচুড়ি, লাবরা ও পায়েস। সংশ্লিষ্ট দু’টি পুজোর ভোগ বিক্রি করে আয়ের পরিমাণ ৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে দুর্গাপুজোর তিন দিন ভোগ বিক্রি থেকে আয়ের পরিমাণ ৮ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। একইভাবে কালীপুজোর ভোগ বিক্রি করা হবে। তাতে খিচুড়ি, লাবরা ও পায়েস থাকবে। যার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি প্লেট ৫০ টাকা। আজ, সোমবার থেকে এই ভোগ বুকিং চালু হবে। আনন্দময়ী কালীবাড়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুজোর পাশাপাশি মন্দিরের তরফ থেকে কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম করা হয়। গত বছর নকশালবাড়ির ও বাগডোগরায় ক্যাম্প করে ২৩টি চা বাগানের ১৬০০ মহিলার মধ্যে শাড়ি বিলি করা হয়েছিল। সেই সব কর্মসূচি এবং মন্দিরের উন্নয়নে দুর্গা ও কালীপুজোর বিশেষ ভোগ বিক্রি করা হয়। এবার ভোগ থেকে মেলা ভক্তদের সেই অনুদান এবং সমিতির নিজস্ব তহবিলের অর্থ যোগ করে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে। এজন্য কোন এলাকার দুর্গতদের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন তা জানতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করা হচ্ছে। কালীপুজোর পর গ্রামগুলিতে ক্যাম্প করে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।