• পর্যটন কেন্দ্র তাবাকোশির পার্ক-রাস্তা ধুয়েমুছে সাফ, নিশ্চিহ্ন বহু গ্রাম, গতিপথ পরিবর্তন রংভং নদীর
    বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রাস্তা, পার্ক, শহিদ বেদি কার্যত ম্যাপ থেকে নিশ্চিহ্ন। সেই এলাকা এখন রংভং নদীর কব্জায়। কারণ সংশ্লিষ্ট নদী গতিপথ পরিবর্তন করে পুরনো জায়গায় ফিরে এসেছে। ভয়াবহ বিপর্যয়ের এক সপ্তাহ পর রবিবার তাবাকোশি পরিদর্শনের পর এমন মত প্রকাশ করেন প্রশাসনের একাংশ। শুধু তাবাকোশি নয়, প্রকৃতির তাণ্ডবে সিওয়ক, চন্দ্রমনধুরা, টুকরে, সৌরিনির বিস্তীর্ণ এলাকা বিধ্বস্ত। সেগুলির একাংশ পাহাড়ের খাদে তলিয়ে গিয়েছে। কিংবা কিছু এলাকা দিয়ে বইছে ঝোরা। সংশ্লিষ্ট পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দিতে ঝাঁপিয়েছে প্রশাসন। তারা এজন্য নতুন করে জমি খুঁজছে। 

    দার্জিলিং পাহাড়ের অফবিট পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে রংভং নদীর তীরে অবস্থিত তাবাকোশি গ্রাম অন্যতম। এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত পাহাড়ের কোলে থাকা ওই গ্রামে ছিল একটি দর্শনীয় পার্ক। তাতে ভিজিটরদের বসার জায়গা, শিশুদের খেলনা, শহিদবেদি ছিল। ৪ অক্টোবরের রাতে প্রবল বর্ষণ, রংভং নদীর জলস্ফীতি ও ধসের জেরে সেই পার্ক তছনছ। এখন সেখান দিয়ে বইছে রংভং নদী। পার্ক সংলগ্ন রাস্তাও নদীগর্ভে। এদিন পর্যটকদের একাংশ গ্রামে ঘুরে এসে বিস্মিত। তাঁদের একাংশ বলেন, তাবাকোশির পার্ক ছিল ছবির মতো দেখতে। কয়েক মাস আগে পাহাড় ঘুরতে এসে এই পার্কে সময় কাটিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, এখন সেটি নেই। স্থানীয়রা বলেন, পার্কটি কার্যত ম্যাপ থেকেই নিশ্চিহ্ন। 

    জোড়বাংলো সুখিয়াপোখরি ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতের অধীনে তাবাকোশি গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পোখরিয়াবং-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে আপার তাবাকোশি ও পোখরিয়াবং-৩ পঞ্চায়েতর অধীনে লোয়ার তাবাকোশি গ্রাম। গ্রাম দু’টিতে হোমস্টের সংখ্যা ছিল ৩৭টি। রংভং নদীর জলের তোড়ে পার্ক ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি ওই হোমস্টেগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, যেখানে পার্ক গড়ে তোলা হয়েছিল, একদা সেই এলাকার পাশেই ছিল রংভং নদী। দীর্ঘদিন আগে নদীর সেই খাত মজে গিয়েছিল। সাতদিন আগে ভয়াবহ বিপর্যয়ের জেরে নদী গতিপথ পরিবর্তন করে পুরনো সেই খাতে ফিরে এসেছে। যারজেরেই সেই পার্ক, রাস্তা উধাও। সুখিয়াপোখরি জোড়বাংলো ব্লকের বিডিও অর্ঘ্য গুহ বলেন, তিনটি আর্থমুভার ও একটি পোকল্যান্ড নামিয়ে ওই পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তা, হোমস্টে সংস্কার করা হচ্ছে। নিশ্চিহ্ন গ্রামের বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য জমিরও খোঁজ চলছে। ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের জেরে তাবাকোশি পর্যটন কেন্দ্রের পার্ক, রাস্তা ধুয়েমুছে কার্যত সাফ। লিঙ্গিয়া মারিবং পঞ্চায়েতের সিওয়ক গুদামধুরার একাংশ ঝোরার স্রোতে উধাও। এজন্য সেখানকার ও সালু চা বাগানের ২০টি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। ঝোরার স্রোতে নিশ্চিহ্ন চন্দ্রধুরার ২৯টি বাড়ি। সেখানে বসতির কোনও চিহ্ন নেই। টুকরে গ্রামের অবস্থাও একই। এরবাইরে মিরিকের সৌরিনি গ্রামে ২৪টি, থরবুর ৩২টি ও ওকাইটি বাগানের পাঁচটি বসতভিটার অস্তিত্ব নেই।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)