সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: দুর্গোৎসব মিটতেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে জালনোটের কারবারিরা। বাংলাদেশ থেকে জালনোট এনে তা এদেশের বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। খালি চোখে এই নোট আসল না নকল তা বোঝাও সম্ভব নয় সাধারণ মানুষের পক্ষে। তাতেই কাজ হাসিল করছে কারবারিরা। বাংলাদেশ থেকে কখনও মুর্শিদাবাদ সীমান্ত কখনও মালদহ সীমান্ত পেরিয়ে জালনোট ঢুকছে। সীমান্তবর্তী এই দুই জেলায় সম্প্রতি বেশ কয়েক লক্ষ টাকার জালনোট উদ্ধার হয়েছে। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে জালনোট পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ করে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ। এক মহিলা ও তার সঙ্গী কারবারিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম ফরিদা বিবি ও তৈমুর শেখ। ধৃতদের উভয়েরই বাড়ি মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগর থানার ১৬মাইল এলাকায়। তাদের কাছ থেকে দু’লক্ষ টাকার জালনোট উদ্ধার হয়েছে। পুলিসের সন্দেহ এড়াতে এই কারবারে মহিলাদের কাজে লাগানো হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ফরাক্কার এসডিপিও শেখ সামসুদ্দিন বলেন, পুলিশের কাছে আগাম খবর ছিল। সেইমতো তাদের আটক করে তল্লাশি চালানো হয়। তাদের কাছে থাকা দু’লক্ষ টাকার জালনোট পাওয়া যায়। তারা জালনোটগুলি কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের হেপাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ও তার সঙ্গী যুবক মালদহ থেকে জালনোট নিয়ে আসছিল। এদিন রাতে নদী পেরিয়ে সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান কলাবাগান গঙ্গা ফেরিঘাট সংলগ্ন এলাকায় আসে। সেখান থেকে তাদের পাকড়াও করে পুলিশ। ধৃতদের কাছে থাকা ব্যাগে তল্লাশি চালাতেই দু’লক্ষ টাকার জালনোট উদ্ধার হয়। ব্যাগে ৫০০টাকার মোট ৪০০টি জালনোট ছিল। নোটগুলি নকল কি না পুলিশকর্মীরা প্রথমে বুঝতে পারেননি। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তারা জানায়, সব নোট নকল। মালদহের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ওই নোট নিয়ে এসে এজেন্টদের মাধ্যমে স্থানীয় বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তার আগেই পুলিশ তাদের জালে তুলেছে। রবিবার ধৃতদের জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। এই কারবারের ব্যাপারে আরও জানতে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। কার কাছ থেকে জাল নোটগুলি নিয়ে কোথায় পাচার করত সেব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই জালনোট পাচারের কারবারে আর কারা জড়িত রয়েছে সেই বিষয়টিও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
সামশেরগঞ্জ থানার এক আধিকারিক বলেন, বাংলাদেশে ও ভারতের এজেন্টরা এই কারবার চালাচ্ছে। জালনোটের কাগজের মান ভালো হওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষে নকল কিনা বোঝা মুশকিল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই কারবারে যুক্ত বাকিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে এই নোটগুলি আসছে। মালদহের বৈষ্ণবনগর ঘাট হয়ে মুর্শিদাবাদ ঢুকছে।