সৌম্যজিৎ সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। বাজছে সাইরেন। প্রতিপক্ষ একে অপরকে বাগে আনতে কখনও বোমারু বিমান থেকে গোলাবর্ষণ করছে, কখনও সীমানার ওপার থেকে টানা গুলি চলছে। কামান থেকেও তোপ দাগা হচ্ছে যখন-তখন। যুদ্ধের চেনা আবহ। তবে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই! এ লড়াই রক্তক্ষয়ী নয়! বাড়িতেই হতে পারে সেই যুদ্ধক্ষেত্র! কারণ, দীপাবলির বাজারে এসে পড়েছে ‘ভারত ট্যাঙ্ক’। তবে এই ট্যাঙ্ক লোহার নয়। ব্যবহার করা যাবে একবারই। ভরতে হবে না গোলাবারুদ। কাগজ ও বারুদের এই ট্যাঙ্ক আসলে এক ধরনের বাজি। আসন্ন কালীপুজো ও দীপাবলি উপলক্ষ্যে চম্পাহাটির হাড়ালে বিক্রি হচ্ছে ‘ভারত ট্যাঙ্ক’। অবিকল কামানের মতো দেখতে। লম্বা পাইপের মতো অংশের মুখে আগুন দিলেই ট্যাঙ্ক এগোতে শুরু করবে। সঙ্গে সঙ্গে বেরবে আগুনের গোলা। মনে হবে, যেন শত্রুপক্ষকে বিনাশ করতে বীরবিক্রমে এগিয়ে চলেছে একটি ট্যাঙ্ক।
বাজির বাজারে চমকের এখানেই শেষ নয়। বিক্রি হচ্ছে গিটার বাজি! এই গিটার বাজবে না, বরং আগুনের ফুলকি ছড়াবে। হাতে ধরে এই বাদ্যযন্ত্রের মুখে আগুনের ছোঁয়া দিলেই গলগল করে বেরোবে আগুনের ফোয়ারা। হাড়ালের বিভিন্ন দোকানে ছেয়ে গিয়েছে এই বাজি। যে তলোয়ার দিয়ে লড়াই হয়, এবার সেটাও বাজির আকারে এসেছে বাজারে। এটি আদতে এক ধরনের রংমশাল। এমনকি, বাসের আদলে তৈরি করা হয়েছে একটি বাজি। তাতে তিনটি আগুন দেওয়ার সলতে আছে। তুবড়ির মতো ফোয়ারা উঠবে সেখান থেকে। এছাড়াও আছে রোমান ক্যান্ডেল, যা থেকে একবারে ১৮টি ‘শট’ বেরোবে (কসমিক ফোর্স, এক ধরনের রংমশাল)।
কালীপুজোর এক সপ্তাহ আগে হাড়াল বাজি বাজার জমে উঠতে শুরু করেছে বলেই দাবি ব্যবসায়ীদের। গত কয়েকদিন বিকেলের দিকে বৃষ্টি কিছুটা হলেও বেচাকেনায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। তবে দোকানদারদের দাবি, ভালো আবহাওয়া থাকলে বিক্রি বাড়বে। অর্জুন দেবনাথ, ননীগোপাল পুরকাইত, সোমনাথ নস্করের মত বাজি বিক্রেতারা বলছেন, ‘ফ্যান্সি বাজির প্রতি মানুষের একটা চাহিদা আছে। এবারের এই নয়া বাজিগুলি ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে ক্রেতাদের। এছাড়া, সেল কেনার আগ্রহ ভালো রয়েছে। আগামী কয়েকদিন আরও অনেক ক্রেতা আসবেন বাজি কিনতে।’