ছাত্রীকে ধর্ষণ বাবা ও নাবালক ছেলের! ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির নামে নবমের পড়ুয়াকে আটকে রেখে নির্যাতন হাড়োয়ায়
বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ভয়াবহ ঘটনা হাড়োয়ায়! ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল ইউটিউবার বাবা ও তার নাবালক ছেলের বিরুদ্ধে। সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ না উঠলেও এই ঘটনায় অভিযুক্ত আরও দু’জন। তারা ধৃত ইউটিউবারের আরেক ছেলে ও তার স্ত্রী। থানায় অভিযোগের ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত বাবা ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তিনদিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আরেক ধৃত নাবালক হওয়ায় পুলিশ তাকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, হাড়োয়া থানা এলাকার ওই বাসিন্দার সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ফলোয়ার রয়েছে। নিয়মিত সে বিভিন্ন ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড করে। সেই সূত্রেই দিনকয়েক আগে সে তার পড়শি এক কিশোরীর পরিবারকে একটি প্রস্তাব দেয়। সে বলে, নাচে পারদর্শী ইতি (নাম পরিবর্তিত)-কে নিয়ে সে কিছু ভিডিও করবে। এর জন্য টাকাও দেবে সে। পরিচিত হওয়ায় ইতি কয়েকদিন তার সঙ্গে বিভিন্ন ভিডিও শুটও করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। কিন্তু ৭ অক্টোবর মেয়ের মুখের মুখ থেকে ন্যক্কারজনক ঘটনার কথা জানতে পারে তার পরিবার। লোকলজ্জার ভয়ে প্রথমে দ্বিধায় থাকলেও সাহস সঞ্চয় করে শনিবার বিকেলে হাড়োয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। অভিযোগপত্রে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই ইউটিউবার একটি ভিডিও বানানোর নাম করে তার মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এমনকি, তার নাবালক ছেলে তাঁর মেয়েকে আশ্বস্ত করে বলেছিল, বিষয়টি যেন কাউকে সে না বলে। কারণ, সে তাকে বিয়ে করবে। কুকীর্তি ঢাকা দেওয়ার জন্য মোটা টাকার প্রলোভনও দেওয়া হয়। এরপর ইউটিউবারের নাবালক ছেলে ইতিকে একটি ঘরে আটকে রেখে জোর করে মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দেয়। তারপর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ইউটিউবারের আরেক ছেলে ও তার স্ত্রী ইতির পরিবারকে জানায়, তাদের মেয়েকে কোনওভাবেই ছাড়া হবে না। কারণ, ইতি এখন তাদের পরিবারের বউ। সেই অবস্থা থেকে পরিবারের লোকজনই ইতিকে মুক্ত করে আনে। ঘটনার অভিঘাতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন পরিবারের সবাই। অবশেষে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নেন। তদন্তে নেমে ইউটিউবার ও তার নাবালক ছেলেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাড়োয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ হয়। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।