• ধর্ষণের পর গর্ভপাত, তরুণীর অভিযোগ লিভ-ইন সঙ্গীর বিরুদ্ধে
    বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লিভ-ইনের নাম করে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, নির্যাতিতা সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ায় জোর করে তাঁর গর্ভপাতও করানো হয়েছে। যাতে গর্ভেই ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়, তার জন্য তাঁকে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল বলে যুবকের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন তরুণী। এই ঘটনার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় লিভ-ইন পার্টনার। শেষমেশ বাধ্য হয়েই নির্যাতিতা যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে ধর্ষণের মামলা রুজু করে অভিযুক্ত যুবক মানস প্রামাণিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে দু’জনের পরিচয়। আলাপ জমে ওঠার পর মোবাইল নম্বর আদানপ্রদান হয়। তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁরা মাঝেমধ্যেই দেখা করতেন। সম্পর্ক গভীর হলে যুবক জানান, এখনই বিয়ে করার পরিকল্পনা তাঁর নেই। বাড়িতে কিছু সমস্যা রয়েছে, তা মিটে গেলে এই সম্পর্কের কথা পরিবারকে জানাবেন। তার আগে তাঁরা লিভ-ইন করতে পারেন।  তাতে রাজি হন তরুণী। এই মৌখিক সম্মতির ভিত্তিতেই যাদবপুরে তাঁরা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। বছর দেড়েক হল তাঁরা একসঙ্গে রয়েছেন। তরুণীর অভিযোগ, ‘প্রায়ই খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে তাঁকে অচৈতন্য করে ধর্ষণ করত মানস। বিয়ের কথা বললে নানা অজুহাতে এড়িয়ে যেত।’ তরুণীর দাবি, ‘লিভ-ইনে থাকাকালীন তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। এর ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তখন তাঁর লিভ-ইন পার্টনার বলেন, তিনি বিষয়টি যেন এখনই কাউকে না জানান। অভিযোগপত্রে ওই তরুণী জানিয়েছেন, এরপর তাঁকে জোর করে একটি ওষুধ খাওয়ানো হয়। তাতেই তাঁর গর্ভস্থ ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায়। তারপর তাঁকে নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে জোর করে গর্ভপাত করায় অভিযুক্ত। এরপর তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর নির্যাতিতা বারবার ফোন করলে যুবক ফোন কেটে দিত। মেসেজেরও রিপ্লাই দিত না। কিছুদিন পর তাঁর ফোন নম্বর ব্লক করে দেয় যুবক। তরুণী বুঝতে পারেন, তাঁকে এড়িয়ে চলছে মানস। তারপরই তিনি যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানালে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। নির্যাতিতার পরনের পোশাক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 

    অভিযুক্তকে রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাঁর আইনজীবী সুব্রত সর্দার বলেন, ওই তরুণীকে জোর করে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করানো হয়নি। আর দু’জনের মধ্যে অনেকদিন ধরেই সম্পর্ক রয়েছে। এটা ধর্ষণের ঘটনা নয়। সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, অভিযুক্তের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)