ডাক বিভাগও এবার ‘প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্স’, বাড়ি বদল করার সময় সহজেই নতুন ঠিকানায় পৌঁছে যাবে জিনিসপত্র
বর্তমান | ১৩ অক্টোবর ২০২৫
বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী , কলকাতা:
বাড়ি বদল করবেন? গেরস্থালির যাবতীয় জিনিসপত্র, বইখাতা, খুঁটিনাটি হাজারও জিনিসপত্র কীভাবে সরাবেন, চিন্তায় ঘুম উড়ে গিয়েছে? বন্ধুর পরামর্শ, ‘প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্স ভাড়া করে নে...’। কিন্তু সে তো অনেক খরচের ব্যাপার! এমন পরিস্থিতিতে আর হাত কামড়াতে হবে না! কারণ, এবার খোদ ডাকবিভাগ আনছে এমন এক পরিষেবা, যা কার্যত ‘প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্স’ পরিষেবার সমতুল। বাজারের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তুলনায় কম খরচেই এই কাজ করবে তারা। তবে বাড়ি থেকে নয়, জিনিসপত্রগুলি আনতে হবে প্যাকিংয়ের যাবতীয় পরিকাঠামো রয়েছে, নিকটবর্তী এমন ডাকবিভাগের কাউন্টারে। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেছে ডাকবিভাগ। আনছে বেশ কিছু নতুন পরিষেবাও। সেই সঙ্গে ঢেলে সাজা হচ্ছে পার্সেল স্থানান্তরের পরিকাঠামো। সেই তালিকাতেই যুক্ত হয়েছে এই পরিষেবা। শুরুতে মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হস্টেলের পড়ুয়াদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে তারা। ডাক বিভাগের কর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হস্টেলের কোনও পড়ুয়াকে চাকরির জন্য যদি দেশের অন্যত্র যেতে হয় বা পড়াশোনা শেষে বাড়ি ফিরতে হয়, তাহলে হস্টেলের জিনিসপত্র নতুন ঠিকানায় পৌঁছে দেবেন ডাক কর্মীরাই। খরচ বেসরকারি সংস্থার তুলনায় কম।
ডাকবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে পার্সেল ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ করা হয়েছে। একটা সময় ছিল, যখন শুধুমাত্র প্যাকিং করা জিনিসপত্রই পাঠানো যেত। পরবর্তীকালে ডাকঘরেই পণ্য প্যাকিং শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিংয়ের জন্য জিপিওর মতো কয়েকটি পোস্ট অফিসে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও আনা হয়েছে। এদিকে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহ রাজ্যের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডাকবিভাগের কাউন্টার আগে থেকেই আছে। সেসব কাউন্টারেই প্যাকেজিংয়ের পরিকাঠামো তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পড়ুয়ারা তাঁদের হস্টেলের জিনিসপত্র এখানে এনে প্যাকিং করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাঠাতে পারবেন সহজেই। সাধারণ মানুষও এই সুবিধা পাবেন। কিন্তু হোস্টেলের ঘরেই প্যাকিং পরিষেবা দেওয়া যাবে না কেন? দপ্তরের এক কর্তা বলেন, ‘এই ধরনের কাজে হস্টেলের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি পেতে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া সবার সুরক্ষার বিষয়টিও জড়িয়ে থাকে। তাই ঝঞ্জাটহীন সুষ্ঠু পরিষেবার জন্য এই সিদ্ধান্ত।’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী, খড়্গপুর আইআইটির মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডাকবিভাগের চুক্তি হতে চলেছে বলে খবর। আরও জানা গিয়েছে, বড় পার্সেলের ক্ষেত্রে ৩৫ কেজি পর্যন্ত এক লপ্তে প্যাকেজিংয়ের সুযোগ মিলবে। ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলের পোস্ট মাস্টার জেনারেল (মেইল অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) সুপ্রিয় ঘোষ বলেন, ‘যদি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের হস্টেল বা প্রতিষ্ঠান থেকে পার্সেল পরিষেবা দেওয়ার জন্য আমাদের কিছুটা জায়গা দেয়, তাহলে আমরা সেখানে পরিকাঠামো গড়ে এই পরিষেবা চালু করতে পারব। এতে পড়ুয়া সহ সবার সুবিধা হবে।’